সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ০৮:৩৯ অপরাহ্ন

রিয়াদে তীব্র গরমে খেটে খাওয়া বাংলাদেশিরা বেতন বঞ্চনার শিকার সাপ্লায়ার প্রতিষ্ঠানের জিম্মায় মানবেতর জীবন, প্রবাসীদের আকুতি—‘সরকার আমাদের রক্ষা করুক’

মোঃ সারোয়ার সাদাত রুম্মান:
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৩১১ বার পড়া হয়েছে

মোঃ সারোয়ার সাদাত রুম্মান:

সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে এই মুহূর্তে তাপমাত্রা প্রতিদিন ৪৩ থেকে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছাচ্ছে। এই অস্বস্তিকর আবহাওয়ার মধ্যেও জীবিকার তাগিদে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন হাজার হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক। নির্মাণসাইট, রোড ওয়ার্ক, লজিস্টিকস কিংবা মেইনটেনেন্স—সব খাতেই তাঁরা কাজ করছেন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, এই কঠিন পরিশ্রমের ন্যায্য প্রতিদান—বেতন—তাদের অনেকেরই ভাগ্যে জুটছে না।

বিভিন্ন সাপ্লায়ার কোম্পানি মাসের পর মাস শ্রমিকদের বেতন আটকে রাখছে। অভিযোগ রয়েছে, কারও বেতন আটকে আছে তিন মাস, কারও বা চার মাস। বেতন চাইলে কেবল আশ্বাস—কিন্তু হাতে কিছুই আসে না।

একজন শ্রমিক বলেন, “প্রচণ্ড রোদের মধ্যে আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ করি। কিন্তু মাস শেষে যখন বেতন আসে না, তখন মনে হয়, এই মরুভূমিতে আমরা শুধু কষ্টেরই মানুষ। পরিবারে টাকা পাঠাতে পারছি না, খরচ চালাতেও হিমশিম খাচ্ছি।”

আরেকজন বলেন, “আমরা চাই না কেউ আমাদের ফ্রি কিছু দিক, আমরা আমাদের হকের টাকা চাই।”

প্রবাসীদের মতে, “সাপ্লায়ার” নামক এই মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবস্থাটি শ্রমিকদের জন্য আজ এক ধরনের নরকে পরিণত হয়েছে। অনেকেই এটিকে দালালচক্রের আধুনিক রূপ বলেই অভিহিত করছেন। তারা সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন—এই প্রথার নিয়ন্ত্রণে শক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হোক।

এদিকে সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাসের ভূমিকা নিয়েও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। প্রবাসীরা জানিয়েছেন, দূতাবাসে কোনো সমস্যার সমাধান পেতে গেলে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়। সেবার মান নিম্নমানের, অনেক ক্ষেত্রে দায়িত্বহীন আচরণও লক্ষ্য করা যায়।

প্রবাসীদের প্রত্যাশা, দূতাবাস যেন প্রকৃত অর্থে প্রবাসীদের পাশে দাঁড়ায়। তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে সাপ্লায়ার নামক জিম্মিব্যবস্থা থেকে প্রবাসীদের মুক্তি দেওয়া হোক এবং দূতাবাসের সেবার মানোন্নয়নে নজর দেওয়া হোক।

“আমরা দেশের জন্য টাকা পাঠাই, অথচ বিদেশে এসে নিজেদেরই রক্ষা করার কেউ নেই—এটা আমরা চাই না।” —বলেছেন আরেক হতাশ শ্রমিক।

দেশের অর্থনীতিতে প্রবাসীদের অবদান অপরিসীম। তাই এই রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের ন্যায্য অধিকার ও সম্মান নিশ্চিত করাই এখন সময়ের দাবী।

সংবাদ টি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ