মো:সালাম রাব্বানী,
দিনাজপুর প্রতিনিধি
লিচুর রাজ্য হিসেবে পরিচিত দিনাজপুরে শুরু হয়েছে রসালো লিচুর মৌসুম। গাছে গাছে ঝুলছে নানা জাতের লিচু। কোথাও এখনও সবুজ, কোথাও রং ধরতে শুরু করেছে—লাল, হলুদ বা গোলাপি। কৃষক আর ব্যবসায়ীদের মুখে এখন একটাই প্রত্যাশা—আর মাত্র কিছুদিনের মধ্যেই বাজারে উঠবে এই জনপ্রিয় ফল।
দিনাজপুরের লিচুর সুনাম দেশজুড়ে। স্বাদ, গন্ধ আর রসালো শাঁসের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই জনপ্রিয় এই ফলটি। এবার সেই সুনামের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নতুন এক অর্জন—ভৌগোলিক নির্দেশক (GI) স্বীকৃতি। এতে করে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে দিনাজপুরের লিচুর পরিচিতি ছড়াবে আরও বহুদূর, এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এই অঞ্চলের মাটি লিচু চাষের জন্য আদর্শ। বিশেষ করে বেলে-দোআঁশ জমিতে লিচুর গাছ ভালো ফল দেয়। স্থানীয়রা জানান, ঠিক কবে থেকে লিচুর চাষ শুরু হয়েছে বলা না গেলেও গত কয়েক দশকে বাণিজ্যিকভাবে এর চাষ ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এখন এটি অনেক কৃষকের প্রধান আয়ের উৎস।
দিনাজপুরে বর্তমানে মাদ্রাজি, বেদানা, হাড়িয়া বেদানা, বোম্বাই, চায়না–থ্রি, চায়না–টু, কাঁঠালি ও মোজাফফরি—এমন নানা জাতের লিচু উৎপাদিত হচ্ছে। এর মধ্যে বেদানা জাতটি বেশ জনপ্রিয়। গোল আকৃতির, লাল-খয়েরি রঙের এই লিচুর খোসা পাতলা, বীজ ছোট আর শাঁস খুব রসালো। বাজারে প্রতি হাজার বেদানা লিচুর দাম ওঠানামা করে ৫,০০০ থেকে ১২,০০০ টাকার মধ্যে।
জুনের শেষ দিকে বাজারে আসবে বোম্বাই ও চায়না–থ্রি জাতের লিচু। লম্বাকৃতির, উজ্জ্বল গোলাপি রঙের এবং সুগন্ধযুক্ত বোম্বাই লিচু যেমন চোখে পড়ে, তেমনি চায়না–থ্রি লিচু আকৃতিতে বড়, দেখতে অনেকটা আপেলের মতো। শাঁস বেশি ও বীজ ছোট হওয়ায় এটিও জনপ্রিয়, বিশেষ করে অভিজাত শ্রেণির মধ্যে।
দিনাজপুরের প্রতিটি বাগান এখন যেন উৎসবে মেতে উঠেছে। বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে লিচুর মিষ্টি ঘ্রাণ। চাষিরা তাকিয়ে আছেন পরিপক্বতার অপেক্ষায়, আর ভোক্তারাও প্রস্তুত স্বাদ নিতে এই মৌসুমি রসালো ফলের।