আসিফ সরকার, জাবি প্রতিনিধি:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী তাদের আবাসিক হলে আত্মহত্যা করেছেন। নিহত শিক্ষার্থী ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ২০২৩-২০২৪ সেশনের (৫৩ ব্যাচ) শিক্ষার্থী এবং বীরপ্রতীক তারামন বিবি হলের বাসিন্দা ছিলেন। তার নাম ছিল তাকিয়া তাসনিম বিভা ।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) ভোর ৫টার দিকে হলে তার ৭০০৫ নম্বর রুমে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়। পরে তার মরদেহ ফ্যান থেকে নামানো হয়। তাকিয়ার বাবার নাম আরিফ হোসেন, এবং তাদের গ্রামের বাড়ি মাগুরা শহরের পারনান্দুয়ালী এলাকায়। তিনি তার বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ব্লকের শিক্ষার্থী শিউলি আক্তার জানান, ভোর ৪টা ৪৬ মিনিটে একটি অজানা নম্বর থেকে ফোন পেয়ে জানতে পারেন তাকিয়ার রুমে গিয়ে দ্রুত দেখার কথা বলা হয়েছে। ফোনে জানানো হয়, তাকিয়া আত্মহত্যা করতে পারে। এরপর তিনি ছুটে গিয়ে দরজা ধাক্কা দেন এবং আশপাশের আরও কয়েকজনকে ডেকে নিয়ে দরজা ভেঙে ফেলেন। তারা দেখেন, তাকিয়া ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছেন। পরে তাকে ফ্যান থেকে নামানো হয়।
আরেক শিক্ষার্থী উম্মে মারিয়াম জানান, তারা খবর পেয়ে গিয়ে দেখেন তাকিয়া ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। ওড়না কেটে তাকে বিছানায় শুইয়ে গলায় হাত দিয়ে ঠান্ডা ও হালকা গরম অনুভব করেন। তবে গলায় তেমন দাগ ছিল না এবং পা ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল।
তাকিয়ার মামা মনির হোসেন বলেন, ভোর সাড়ে ৫টার দিকে হল থেকে ফোন পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন, তাকিয়াকে ফ্যান থেকে নামানো হয়েছে। এর আগেই তিনি তাকিয়ার বাবাকে ফোনে খবর দেন। তার বাবা-মা মাগুরা থেকে রওনা দেন।
পুলিশ কর্মকর্তা মাসুদ জানান, নিহত শিক্ষার্থীর তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য পরিবারের এবং হল প্রাধ্যক্ষের অনুমতি নেওয়া হবে। অনুমতি না পেলে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
তাকিয়া তার রুমে একাই থাকতেন এবং নিয়মিত হলে থাকতেন না। তার রুমের অন্যান্য সদস্যরাও হলে ছিলেন। সহপাঠীদের ধারণা, বয়ফ্রেন্ডকে ভিডিও কলে রেখে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। পুলিশ তার রুম থেকে ডায়েরি, ল্যাপটপ এবং এক মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে।