মোঃ সালাম রাব্বানী
স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর : উত্তরাঞ্চলের জেলা দিনাজপুরে তীব্র শীতের প্রকোপে লেপ-তোশক ও জাজিমের চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা শীত নিবারণের জন্য নতুন লেপ তৈরির পাশাপাশি পুরোনো লেপ সংস্কারে ব্যস্ত সময় পার করছেন। শীতকালীন এই চাহিদা স্থানীয় ব্যবসায়ী ও কারিগরদের আয় বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে।

লেপ-তোশক তৈরিতে ব্যবহৃত তুলার মূল্যবৃদ্ধি সত্ত্বেও পণ্যগুলোর চাহিদা অব্যাহত রয়েছে। কার্পাস তুলা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩৫০ টাকায়, শিমুল তুলা ৪০০-৪৫০ টাকায়, অঙ্গুরি তুলা ১২০-১৫০ টাকায় এবং ঝুট তুলা ৬০-৮০ টাকায়। তুলার উচ্চমূল্যের কারণে লেপ তৈরির খরচ বেড়ে গেছে, যা ব্যবসায়ীদের লাভের পরিমাণে প্রভাব ফেললেও শীতের চাহিদা মেটাতে তাদের কর্মব্যস্ততা কমেনি।

দিনাজপুর শহরের কাঞ্চনঘাট এলাকায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত লেপ-তোশক তৈরির কাজ চলছে। লালসালু কাপড়ে সুঁই-সুতার নিপুণ কাজের মাধ্যমে লেপ তৈরি করা হচ্ছে। পুরোনো লেপ ভেঙে নতুন লেপ তৈরি এবং তুলা ধোলাইয়ের কাজও চলছে পুরোদমে। প্রতিটি লেপ তৈরি করতে কারিগররা দুই থেকে তিন ঘণ্টা সময় নিচ্ছেন এবং মজুরি পাচ্ছেন ৩০০-৩৫০ টাকা।

শীতের তীব্রতার কারণে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ লেপ-তোশক কিনতে ভিড় করছেন।
অটোচালক সোহেল রানা বলেন, “অল্প খরচে একটি লেপ তৈরি করতে এসেছি। শীতের রাতে এটি খুবই প্রয়োজন।”
কৃষক আলামিন জানান, “মাঠের কাজ শেষে রাতে শীত থেকে বাঁচতে একটি লেপ কেনা দরকার।”
আশরাফুল নামের আরেক ক্রেতা জানান, “মায়ের জন্য একটি লেপ বানাতে এসেছি। আমার বাজেট ৩ হাজার টাকা।”

কাঞ্চনঘাট এলাকার লেপ-তোশক ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, “শীত যত বাড়বে, লেপ-তোশকের বিক্রিও তত বাড়বে। তুলা ও কাপড়ের দাম কিছুটা বেড়েছে, কিন্তু চাহিদা অনেক বেশি থাকায় বিক্রি ভালো হচ্ছে।”
ব্যবসায়ী শামীম আহমেদ বলেন, “প্রতিদিন ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে আমরা ব্যস্ত সময় পার করছি। এ বছরের বিক্রি আমাদের জন্য সন্তোষজনক।”

তীব্র শীতের কারণে দিনাজপুরের লেপ-তোশক শিল্পে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। এই মৌসুমে স্থানীয় বাসিন্দাদের শীত নিবারণের পাশাপাশি ব্যবসায়ী ও কারিগরদের আয় বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি হয়েছে। শীতের সময় এই শিল্প স্থানীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।