মোঃ সেলিম রেজা, নকলা, শেরপুর প্রতিনিধি:
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পরে দেশের বিভিন্ন থানাসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। এরপর থেকে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে কর্মবিরতিতে যান পুলিশ। ফলে জনমনে আইন শৃঙ্খলা অবনতির আশঙ্কা দেখা দেয়। সারাদেশের জেলা, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদে সেবাদানের গতি ও মানে ধীরতা দেখা দেয়। তবে দেশের সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মাঠে থাকায় জনমনের আতঙ্ক আস্তে আস্তে কমতে থাকে।
এরই ধারাবাহিকতায় শেরপুরের নকলা উপজেলার জনসেবা দানকারী স্থানীয় সরকার বিভাগের বিশেষ করে উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদে জনসেবার গতি ও মান স্বাভাবিক হয়েছে। জনমনে স্বস্থি ফিরেছে। জনগন নির্ভয়ে সেবা নিতে আসা শুরু করেছেন। যদিও এখনো জনমনের ভয় ও স্বস্থি শতভাগ ফিরেনি। ফলে পূর্বের চেয়ে সেবা গ্রহিতার উপস্থিতি কম।
সরেজমিনে উপজেলার ৫নং বানেশ্বরদী ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে দেখা যায়, প্যানেল চেয়ারম্যান উছমান আলী বারান্দায় চেয়ার টেবিল পেতে বসে জনসেবায় নিয়োজিত রয়েছেন। তার সাথে কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন ইউপি সচিব গোলাম কবির, ইউপি সদস্য মনির হোসেন ও ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা (ইউডিসি)-এর সহকারী সজিব মিয়া। তাদের কাজে সহযোগিতা করছেন গ্রাম পুলিশ ছাইদুল ইসলাম ও রূপচাঁন।
সেবা নিতে আসা বানেশ্বরদী গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে শিক্ষার্থী দ্বীন ইসলাম, মোরাদ মিয়ার ছেলে সাঈদ মিয়া ও ইউসুফ আলীর ছেলে কাব্য জানান, তারা পরিচয়পত্র ও জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে এসেছেন। আগের চেয়ে জনগনের চাপ কম থাকায় বর্তমানে দ্রুত সেবা দেওয়া হচ্ছে বলে তারা জানান।
গ্রাম পুলিশ রূপচাঁন ও ছাইদুল বলেন, আমরা চাকরি করি। আমরা সবাই আমাদের দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করে আসছি। তারা জানান কোনদিন একমুহুর্তের জন্যও তাদের কাজ বন্ধ হয়নি।
ইউপি সচিব গোলাম কবির জানান, আমাদের সেবাদান কার্যক্রম ২ দিন বন্ধ থাকলেও এখন পুরোদমে কাজ চলছে। কোন প্রকার হয়রানি বা চাপ নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন।
৬নং পাঠাকাটা ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা (ইউডিসি) সেলিম রেজা জানান, তাদের ইউনিয়নবাসীর জন্য সেবাদান সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটি ছাড়া এক মুহুর্তের জন্যও বন্ধ করা হয়নি। এখানকার মানুষ বুঝতেই পারেনি যে, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পরে দেশে ক্রান্তিকাল চলছে।
বানেশ্বরদী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান উছমান আলী জানান, চেয়ারম্যান মাজহারুল আনোয়ার মহব্বত সফরের উদ্দেশ্যে ছুটি নিয়ে বিদেশে অবস্থান করায় তার পরিবর্তে প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতিতে জন্ম নিবন্ধন, মৃত্যু সনদ, ওয়ারিশ সনদ, পরিচয়পত্র এমন অতি জরুরি কিছু সেবা ছাড়া অন্যান্য সেবা গ্রহিতার উপস্থিতি এখনো কম। তবে দিন দিন সেবা গ্রহিতার সংখ্যা বাড়ছে বলেও তিনি জানান। আগামী সপ্তাহের শুরুতেই সকল কার্যক্রম শতভাগ স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে তিনি আশাব্যক্ত করেন।