1. admin@alorbangladesh.com : Alor Bangladesh : Dainnik alor Bangladesh
  2. info.popularhostbd@gmail.com : PopularHostBD :
শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
সেনবাগের সড়কে যানযট নিরসনকল্পে ও ফুটপাত দখলমুক্ত করতে পুলিশের অভিযান টেকনাফে হোয়াইক্যং চেকপোস্টে ইয়াবা বোঝাই সিএনজিসহ চালক আটক। নাসিরনগরে ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ করলেন সাংসদ পুত্র সৈয়দ সাজ্জাদ মোর্শেদ সোহান। সড়ক দুর্ঘটনায় চৌগাছায় এক নারীর মৃত্যু। নরসিংদীতে ১২ ডিসেম্বর জেলা হানাদার মুক্ত দিবস পালিত। রায়পুরা উপজেলার সাংবাদিক দের সাথে, নবাগত ইউ,এন,ও র মতবিনিময় সভা। সাতক্ষীরায় ইউএনওর অভিযানে চিংড়িতে পুশ করায় ১লক্ষ টাকা জরিমানা। দেশে ফিরেছেন মির্জা ফখরুল উপজেলা প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ কর্তৃক দুম্বার মাংস বিতরণ । সীতাকুণ্ডের কুমিরায় মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে বিএনপির প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত

মাদরাসা সুপারের অনৈতিক কর্মকান্ডে প্রতিবাদ করায় নারী কর্মচারীর ৩ বছর বেতন-ভাতা বন্ধ

আবদুর রউফ, চৌদ্দগ্রাম।
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৪
  • ১৩ বার পড়া হয়েছে

আবদুর রউফ, চৌদ্দগ্রাম।

কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার রায়কোট উত্তর ইউনিয়নের দাসনাইপাড়া ইসলামীয়া মহিলা দাখিল মাদরাসা সুপার মাওলানা এম. এ ইউছুফ খানের বিরুদ্ধে ওই মাদরাসার নিম্নমান সহকারীকে যৌন হয়রানি ও অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ৩ বছর ধরে বেতন-ভাতা বন্ধ রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এজন্য তার অপসারণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালে মাদরাসা সুপার আবু ইউছুফ নাম পরিবর্তন করে ঢাকার একটি মাদরাসা-সহ একইসাথে দু’টি মাদসারায় সুপারের দায়িত্ব পালন ও সরকারি সকল সুবিধা ভোগ করেন। একপর্যায়ে বিষয়টি অবগত হলে দু’টি প্রতিষ্ঠান থেকেই তাকে শোকজ করা হয়। ২০০৭ সালে তার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠলে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন-সহ শিক্ষা অধিদপ্তর পৃথক তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ম্যানেজিং কমিটিকে সুপারিশ করে। এছাড়াও মাদরাসার নারী কর্মচারী নাজমা আক্তার তার বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তোলেন। বিষয়টির তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। ছাত্রীদের সাথেও তার আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় অনেক সচেতন অভিভাবকই নিজ সন্তানকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে মাদরাসার মঞ্জুরী নবায়ন না করেই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা ও এ বিষয়ে কার্যকর কোনো উদ্যোগ গ্রহণ না করার কারণে-অকারণে অন্যায়ভাবে শিক্ষক-কর্মচারীকে শোকজ করা, চাকুরি থেকে বহিস্কারের হুমকি প্রদান, প্রতিষ্ঠানে আসতে বাধা দেওয়া, বাড়তি ক্লাস চাপিয়ে দেওয়া সহ মাদরাসার শিক্ষক-কর্মচারীদের বিভিন্ন হয়রানি করা, অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলায় প্রতিষ্ঠানের শুভাকাঙ্খী ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আদালতে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি যেন তার নিত্যদিনের কাজ। দীর্ঘদিন ধরে বেতন-ভাতা বন্ধ থাকায় মানবেতর জীবন-যাপন করছেন ভুক্তভোগি নিম্নমান সহকারী নাজমা আক্তার। ভুক্তভোগি অনেকেই তার রোষানলে পড়ে চাকুরি যাওয়ার ভয়ে মুখ খুলছেন না। চারিত্রিক স্খলন ও নৈতিক অবক্ষয় প্রমাণিত হওয়ার পরও তিনি কিভাবে স্বীয় পদে দায়িত্ব পালন করেন, বিষয়টি নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

সোমবার (২১ অক্টোবর) সকালে সরেজমিনে মাদরাসায় গিয়ে দেখা যায়, কাগজে-কলমে মাদরাসার ছাত্র সংখ্যা শতাধিক দেখা গেলেও প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত শ্রেণিকক্ষগুলো তালাবদ্ধ ছিলো। পঞ্চম শ্রেণিতে ১ জন শিক্ষার্থী ও ষষ্ঠ শ্রেণিতে ২ জন সহ সবমিলিয়ে প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ১৮ থেকে ২০ জন। মাদরাসা সুপার দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানে আসেন না এবং শিক্ষক হাজিরা খাতায় তার কোন স্বাক্ষর নেই। প্রতিষ্ঠানে না এসেও স্বীয় বেতন-ভাতা গ্রহণ করছেন তিনি। স্বল্প সংখ্যক শিক্ষার্থী নিয়ে ১১ জন শিক্ষক ও ৪ জন কর্মচারী সরকারি বেতন-ভাতা সহ সকল সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করায় প্রতিমাসে সরকারের বিপুল পরিমান অর্থ গচ্ছা যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানে নেই কোনো শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ। রয়েছে বিস্তর অভিযোগ।

যৌন হয়রানির শিকার নিম্নমান সহকারী নাজমা আক্তার বলেন, করোনাকালীন সময়ে সুপার আমাকে বিভিন্নভাবে অনৈতিক প্রস্তাব দেয় ও বিরক্ত করে। আমি ওই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তিনি ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে আমার হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর বন্ধ করে দেন এবং আমার বেতন ভাতা বন্ধ করে দেন। আমি যখন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগ করি। তিনি ডিসেম্বরের ৫ তারিখ থেকে আমার বেতন ভাতা বন্ধ করে দেন। এ পর্যন্ত আমার বেতন চালু করেননি। আমি প্রশাসনের নিকট এই ভন্ড-লম্পট সুপারের বিচার ও আমার বেতন ভাতা চালুর দাবি জানাই।

স্থানীয় আব্দুস সাত্তার, দেলোয়ার হোসেন, কামাল উদ্দিন, ফারুক, এয়াকুব নবী-সহ অনেকেই জানান, মাদরাসা সুপার আবু ইউছুফ এর অনিয়ম-দুর্নীতির কথা বলে শেষ করা যাবেনা। জাল সনদের মাধ্যমে নিজ স্ত্রীকে মাদরাসায় চাকুরী দিয়েছেন তিনি। এছাড়াও ভুয়া ভাউচার দেখিয়ে এবং সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে কয়েক ধাপে মাদরাসার বিভিন্ন খাতের প্রায় ২-৩ লাখ টাকা উত্তোলন করে তিনি আত্মসাত করেছেন। বিভিন্ন অন্যায় আবদার না শোনায় মাদরাসার শিক্ষক-কর্মচারীদেরকে তিনি অযথা হয়রানি করে আসছেন। তদন্ত কমিটি তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়ায় ম্যানেজিং কমিটি তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে। আদালতে মিথ্যা মামলা দিয়ে বিভিন্ন সময় এলাকাবাসীকে তিনি হয়রানি করে আসছেন। তার স্বেচ্ছাচারীতায় শিক্ষার্থী কমে যাওয়া-সহ মাদরাসাটি আজ ধ্বংশের পথে। নিম্নমান সহকারীকে যৌন হয়রানির-সহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আমরা তার এসব কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা প্রশাসন-সহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানাই।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সুপার আবু ইউছুফের মুঠোফোনে কল দিলে তিনি জানান, আমি বাধা পেয়ে মাদরাসায় আসতে পারছিনা। আনিত অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। আদালতে এ সংক্রান্ত মামলা চলমান রয়েছে। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের সাথে ঔদ্ধত্বপূর্ণ আচরণ করে লাইনটি কেটে দেন।

নাঙ্গলকোট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাছির উদ্দীন বলেন, পরস্পর অভিযোগ করেছে। এটি নিয়ে আদালতে মামলা রয়েছে। আমাদের কাছে যে অভিযোগ রয়েছে, সে বিষয়ে তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুরাইয়া আক্তার লাকী বলেন, সুপারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গুলো শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তবে অভিযোগের সাথে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস না থাকায় তদন্ত করতে সময় লাগছে। তদন্ত শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সংবাদ টি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved
Design BY POPULAR HOST BD