মোঃ কামাল হোসেন প্রধান জেলা প্রতিনিধি নরসিংদী ঃ
নরসিংদীতে গত ০১ অক্টোবর ২০২৪ তারিখ দুপুরে নরসিংদী কাউরিয়া পাড়া পৌর ঈদগাহ মাঠের গেটের সামনে পারিবারিক ও জমি সংক্রান্ত পূর্বশত্রুতার জেরে হানিফ মিয়া (৩২) নামক একজনকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যার করে। এই ঘটনায় নরসিংদী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয় যার এফআইআর নং-২, তারিখ- ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ধারা- ৩০২/১১৪/৩৪ দন্ডবিধি ১৮৬০। নিহত হানিফ মিয়া (৩২) একই এলাকার কালাম মিয়ার ছেলে। এ পাশবিক ও নৃশংস খুনের ঘটনাটি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও মিডিয়ায় প্রকাশিত হলে নরসিংদীসহ সারাদেশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
উক্ত ঘটনার পর থেকে র্যাব-১১ এর একটি চৌকস দল ঘটনাটির ছায়াতদন্ত শুরু করে এবং আসামীদের গ্রেফতারে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় ১০ অক্টোবর ২০২৪ ইং তারিখ রাতে র্যাব-১১, সিপিএসসি, আদমজীনগর এবং নরসিংদী ক্যাম্প এর যৌথ অভিযানে এই নৃশংস হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত নাঈম (৩০), ২। মোঃ নাদিম মিয়া (২৫), উভয় পিতা- মোঃ হাবিবুর রহমান হাবু, সাং- চৌয়ালা, থানা- সদর, জেলা- নরসিংদীদ্বয়কে দক্ষিণ মাসাবো, তারাবো, রূপগঞ্জ এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়।
জানা যায়, পারিবারিক ও জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে গত দেড় মাস আগে নিহত হানিফ ও তার ছোট ভাই আব্দুল্লাহ বাবু, প্রতিবেশী সাজ্জাদ এর সহযোগীতায় তাদের মামা হাবিবুর রহমান হাবু মিয়াকে কুপিয়ে হত্যা করে। ওই ঘটনায় নিহত হানিফ, আব্দুল্লাহ এবং সাজ্জাদের নামে নরসিংদী মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। পরবর্তীতে আব্দুল্লাহ বাবু সংশ্লিষ্ট থানা কর্তৃক গ্রেফতার হয়। নিহত হানিফ এবং সাজ্জাদ আত্মগোপনে চলে যায়। পরবর্তীতে ০১ অক্টোবর ২০২৪ তারিখ আনুমানিক দুপুর ২ টা সময় আব্দুল কাদের এর ছেলে মোঃ হানিফ মিয়া (৩২) নরসিংদী মডেল থানাধীন পৌর ঈদগাহ মাঠে জনৈক ফিরোজ মিয়ার জানাযায় নামাজ পড়তে যায়। এই সময় দুই সহোদর নাঈম এবং নাদিম ভিকটিম হানিফ মিয়াকে দেখতে পেয়ে নরসিংদী জেলার সদর থানাধীন সুরমী সিনেমা হলের সামনে কামারের দোকান থেকে বড় ছুরি ক্রয় করে হোসেন বাজারে উৎ পেতে থাকে। পরে কাউরিয়াপাড়া পৌর ঈদগাহ মাঠের মেইন গেটের সামনে হানিফ মিয়াকে দেখতে পেয়ে নাদিমের সহযোগীতায় নাঈম ভিকটিমকে প্রকাশ্যে দিবালোকে পেছন থেকে গলার ডান পাশে কোপ মারিলে ভিকটিম মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরবর্তীতে আসামীদ্বয় তাদের হাতে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে পুনরায় ভিকটিমের নাকের মাঝ বরাবর কুপিয়ে গভীর ক্ষত করে ভিকটিমের মৃত্যু নিশ্চিত করে নরসিংদীর দূর্গম চরে পালিয়ে যায় এবং হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি মেঘনা নদীতে ফেলে দেয়। ০৩ অক্টোবর ২০২৪ হতে ০৮ অক্টোবর ২০২৪ তারিখ পর্যন্ত তারা নরসিংদীর রায়পুরা থানাধীন নিলক্ষা নাদিমের শ্বশুরবাড়িতে আত্মগোপনে থাকে। পরবর্তীতে ০৯ অক্টোবর ২০২৪ তারিখ র্যাব তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় রূপগঞ্জের তারাবো এলাকায় হত্যাকারীদ্বয়ের অবস্থান সনাক্ত করে গ্রেফতার করেন।