সুমাইয়া মোস্তাকিম বগুড়া জেলা প্রতিনিধি :
বগুড়া জেলা শিবগঞ্জ উপজেলার কাটগাড়া পূর্বপাড়ায় অবস্থিত সরকারি খাস কাটগড়া মৌজার জে.এল. নং ৮২ এর আর. এস ১/১ নং খতিয়ানে ৫৭৭/৯২৫ নং দাগে ৮০ শতাংশ পুকুরটি দীর্ঘদিন ধরে কাটগাড়া পূর্বপাড়া বাইতুন নূর জামে মসজিদের নামে নিবন্ধিত ছিল এবং পুকুর থেকে আসা আয় মসজিদের কাজে ব্যয় হতো। কিন্তু গত ০৫/০১/২০২২ জানুয়ারী আওয়ামীলীগ পন্থী আটমুল ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ বেলাল হোসেন নব নির্বাচিত হয়(যিনি বর্তমানে ছাত্র আন্দোলনে বগুড়ায় ৪ই আগষ্টের সেলিম মাস্টার হত্যার আসামী)। তাই আওয়ামী চেয়ারম্যানের ক্ষমতাবলে গত ০৬/০১/২০২২ খ্রি: থেকে প্রায় তিন বছর ধরে আওয়ামী লীগের কিছু প্রভাবশালী নেতা—মোঃ শফিকুল মোল্লা এবং মোঃ আবু সাইদ মোল্লাসহ অনেকে জোরপূর্বক এই পুকুরটি ভোগ দখল করে খাচ্ছেন। এমনকি তারা একই গ্রামের অন্য আরেকটি বড় সরকারি পুকুর কাটগড়া মৌজার ৪৬০ দাগে অবৈদ্ধ ভাবে আওয়ামী লীগের ক্ষমতা বলে নিজেদের স্বার্থে দখল করে খাচ্ছেন।
এই পরিস্থিতির ফলে কাটগাড়া পূর্বপাড়া গ্রামবাসী পুকুরটির মালিকানা পুনরুদ্ধার করে আবার নতুনভাবে তা লীজ নেওয়ার মাধ্যমে মসজিদের নামে ফিরে পাওয়ার দাবি জানাচ্ছে। গ্রামবাসী পুকুরটি মসজিদের নামে ফেরত চাইলে এবং তার পূর্বের নিয়মে আয় মসজিদের কাজে ব্যয় করার দাবি জানালে, তাদের ওপর হুমকি ধামকি দেখাচ্ছেন আওয়ামী লীগের সাবেক নেতারা।
গ্রামবাসীর একটাই দাবি—পুকুরটি যেন পুনরায় মসজিদের নামে হয় এবং তার আয় মসজিদের কাজে ব্যবহৃত হয়। এই বিষয়ে তারা প্রশাসনের সহযোগিতার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গত ১৮/০৮/২০২৪ খ্রিঃ অভিযোগ দায়ের করছিলেন এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলেন।
সেই সাথে গত ২০/০৮/২০২৪ এবং ০১/০৯/২০২৪খ্রিঃ পুকুরটি সরকারি ভাবে আবার পূর্বের ন্যায় লীজ নেওয়ার জন্য বাইতুন নূর জামে মসজিদ কমিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর দুইটি(২) আবেদন প্রদান করেন।
ঘটনার সাক্ষাতকারে ও সত্যতা প্রমানের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানিয়ে গত ২৮/০৮/২০২৪ খ্রিঃ শিবগন্জ উপজেলা বৈষম্যবিরধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি টিম উক্ত গ্রামে গেলে কাটগাড়া গ্রাম ও আশেপাশে গ্রামবাসীর কাছে থেকে ঘটনার সত্যতা প্রানিত পাওয়া যায় এবং গ্রামবাসীর দাবি ও চাওয়া ভিডিও এর মাধ্যমে ধারন করে আনা হয় এবং তা ভিডিও নিউজের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।
কাটগাড়া পূর্বপাড়া বাইতুন নূর জামে মসজিদের মুসল্লিগণ এবং গ্রামবাসী সাক্ষাতকারে বলেন – আমরা এই মহল্লার মসল্লি সংখ্যা ৬০ জন। বসতবাড়ির সংখ্যা ৪০ ঘর, এর মধ্যে ২০ ঘর বসতবাড়ির ২০টি পরিবার ভূমিহীন পরিবার। বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার পরেও দরিদ্র ও অভাবী ভূমিহীন হওয়ায় আমাদের কোনো সামর্থ ছিলোনা মহল্লায় মসজিদ স্থাপন করার। কিন্তু আল্লাহর রহমতে আমাদের অনকে কস্ট, পরিশ্রমে এবং বাজারে-গন্জ থেকে আর্তিক সহায়তা চেয়ে সকলের পরিশ্রমে বাইতুন নূর জামে মসজিদটি স্থাপন করা হয়। মহল্লার অধিকাংশ পরিবার ভূমিহীন হওয়ার জন্য মসজিদের ইমাম- মোয়াজ্জিমের বেতন পরিশোধ করতে ব্যর্থ, এমনতো অবস্থা মসজিদের সামনে সরকারি ৮০ শতাংশ খাস পুকুরে মাছ চাষ করে মসজিদে কাজ করা হতো। কিন্তু আওয়ামীলীগের নেতারা বিগত প্রায় ৩ বছর ধরে তারা আমাদের বাইতুন নূর জামে মসজিদের পুকুরটি ক্ষমতাবলে দখল করে। আমরা ভূমিহীন হওয়ার আমরা তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলে নানা নির্যাতনের স্বীকার হতে হয়। এ ব্যপারে ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ হওয়াই তিনি সঠিক ব্যবস্থা গ্রহন না করে, তিনি আওয়ামীলীগ নেতাদের সাহায্য করেন। বর্তমানে এখন সরকারি খাস পুকুরটি আওয়ামীলীগের নেতাদের কাছে অবৈদ্ধভাবে দখলে আছে। এবং তারা এই পুকুরটির ন্যায় অন্য আরেটি পুকুর সরকারি লীজ ছাড়া দখল করে খাচ্ছেন, যেটি কাটগড়া মৌজার ৪৬০ দাগে অবস্থিত।
ভূমিহীনদের মহল্লার খাস পুকুরটি শিবগন্জ উপজেলাধীন কাটগড়া মৌজার জে.এল. নং ৮২ এর আর এস ১/১ নং খতিয়ানে ৫৭৭/৯২৫ নং দাগে শ্রেণি পুকুর পরিমাণ ৮০ শতাংশ সরকারি সম্পত্তি পূর্ব থেকে কাটগাড়াপূর্বপাড়া বাইতুন নূর জামে মসজিদের অধীনে ছিলো এবং পুকুরটির পাড়ে সরকারি খাস জায়গায় ভূমিহীনদের নিজস্ব সম্পত্তি না থাকায় বাইতুন নূর মসজিদটি খাস পুকুরের পাড়েই নির্মাণ করা হয়েছিলো। মহল্লার অধিকাংশ মুসল্লি ভূমিহীন হওয়ায় আমরা বিগত ৩০-৩৫ বছর পূর্বে থেকে উক্ত সরকারি খাস পুকুরের পূর্ব, উত্তর ও দক্ষিণ পাড়ে নিজেদের বসতবাড়ি স্থাপন করে জীবনযাপন করে আসতেছি।
আমাদের ভূমিহীনদের এখন একটাই চাওয়া দেশের সরকার ও প্রসাশন যেন আমাদের এই ভূমিদের দিকে সুদয় নজর প্রদান করেন, সেই সাথে আমাদের মহল্লার মসজিদের উন্নয়ন ও ভূমিহীনদের সমস্যার দিকগুলো বিবেচনা করে বগুড়া জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মহোদয় যেন সরকারী খাস পুকুরটি কাটগড়াপূর্বপাড়া বাইতুন নূর জামে মসজিদ কমিটির নামে বৈদ্ধভাবে লীজ প্রদান করেন।