মোঃ নেওয়াজ মোর্শেদ নোমান, জয়পুরহাটঃ
জয়পুরহাটে পাট কাটা, জাগ দেওয়া ও আঁশ ছাড়ানোয় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। বর্তমানে বাজারে ভাল দাম পাওয়ায় খুশি তারা। প্রতিমণ পাট বিক্রি হচ্ছে ২৮শ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে বিগত সময়ে লোকশানসহ নানা কারণে এবার জেলায় কমেছে পাটের চাষ।
জানা গেছে, প্রতিবছর একটু লাভের আশায় জয়পুরহাটে ব্যাপক পাটের চাষ করেন কৃষকরা। তবে এই পাট চাষ করতে গিয়ে নানা প্রতিবন্ধকতার শিকার হন তারা। আশেপাশের খাল, ছোট ছোট পুস্কুনি ভরাট হয়ে যাওয়ায় পাট পঁচানোর জন্য জাগ দেয়ার জায়গা সঙ্কট রয়েছে। এছাড়া বিগত কয়েক মৌসুমে পাটের ভাল দাম না পাওয়ায় অনেকেই এই চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। গত মৌসুমে জেলায় ৩ হাজার ১১৮ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়েছিল। কিন্তু এবার হয়েছে ২ হাজার ৮৮০ হেক্টর। সে হিসেবে গত মৌসুমের তুলনায় চলতি মৌসুমে পাটের আবাদ কমেছে ২৩৮ হেক্টর জমির। বর্তমানে জেলায় পাট কাটা প্রায় শেষের দিকে। কৃষকরা পাট জাগ দেওয়া ও আঁশ ছাড়ানোয় ব্যস্ত সময় পার করছেন। বাজারে প্রতিমণ পাট বিক্রি হচ্ছে ২৮শ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত।
সদর উপজেলার দোয়ানী গ্রামের অসিম চন্দ্র বলেন, ‘এবার পাটের ফলন ভাল হয়েছে। বিঘাপ্রতি ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ৩ হাজার টাকা মণ পাট বিক্রি করেছি। এতে বেশ লাভ হয়েছে।
চকশ্যাম গ্রামের রবিউল বলেন, ‘গত বছর ৩ বিঘা জমিতে পাটের চাষ করেছিলাম। এবছর করেছি ৪০ শতক জমিতে। পাট পঁচানোর জন্য জাগ দেয়ার জায়গা কম। আশেপাশের খাল ও ছোট ছোট পুস্কুনিগুলো ভরাট হয়ে গেছে। নদীতে জাগ দিলে অনেক সময় ভেসে যায়।’
হাতিল হাজিপাড়ার আজিজার রহমান বলেন, ‘বিঘাপ্রতি জমিতে ৮ থেকে ১০ মণ পাট হয়। এবারও ফলন ভাল হয়েছে। বর্তমানে পাট কেটে জাগ দেবো কোথায় সেই জায়গা পাচ্ছি না। ছোট পুকুর ও খাল অনেকটা কমে গিয়েছে। যেগুলোও আছে তাতে মাছ চাষ করায় পাট জাগ দিতে দেয় না। এজন্য পাটের চাষ কমে গেছে।’
জয়পুরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রাহেলা পারভীন জানান, ‘এবার বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। এতে করে আগামীতে কৃষকরা পাট চাষে আরও উদ্বুদ্ধ হবে। পাটের চাষ বাড়ানোর জন্য কৃষি বিভাগ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’