1. admin@alorbangladesh.com : Alor Bangladesh : Dainnik alor Bangladesh
  2. info.popularhostbd@gmail.com : PopularHostBD :
রবিবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:১৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
চৌগাছা প্রেসক্লাবের সাধারণ সভায় যশোর জেলা পরিষদের প্রশাসককে ধন্যবাদ জ্ঞাপন সীতাকুণ্ডে ‘ইসকন’ নিষিদ্ধ ও আইনজীবী হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বাগেরহাটে নিরাপদ সড়ক চাইএর ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত চৌদ্দগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত ৫ বাগেরহাটে বাজারের ব্যাগে রাখা এক নবজাতক উদ্ধার বাগেরহাট পৌরসভার ২২৭ কর্মচারীর ছয় মাস বেতন বন্ধ, সড়ক অবরোধ বিক্ষোভ সীতাকুণ্ডে মাদক বিরোধী জনসচেতনতা মূলক কর্মসূচি অনুষ্ঠিত চৌদ্দগ্রাম পৌরসভা বিএনপির শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ বাগেরহাটে বিএনপির সম্প্রীতি সমাবেশ মাংলা বন্দরের ৭৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে বসুন্ধরা গ্রুপের টগিশিপিং অ্যান্ড লজিস্টিকস এবং মাল্টি ট্রেডিং লিমিটেডকে সন্মাননা প্রদান

বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে সেইভ ফিউচার বাংলাদেশ বৈশ্বিক জলবায়ু ধর্মঘট পালন

মোঃ জনি হোসেন স্টাফ রিপোর্টার ঢাকা।
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৪২ বার পড়া হয়েছে

মোঃ জনি হোসেন স্টাফ রিপোর্টার ঢাকা।

২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সালে সারা বিশ্বজুড়ে জলবায়ু ন্যায়বিচারের দাবিতে বৈশ্বিক জলবায়ু ধর্মঘট পালিত হয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে সেইভ ফিউচার বাংলাদেশ বৈশ্বিক জলবায়ু ধর্মঘট পালন করে বিশ্ব নেতা এবং অন্তবর্তীকালীন সরকারের নিকট বিভিন্ন দাবি উপস্থাপন করে।

বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনে বিশ্বের অন্যতম একটি ঝুঁকিপ্রবণ দেশ। ২০০০ থেকে ২০১৯ সালে সংঘটিত জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি বিবেচনায় বৈশ্বিক জলবায়ু ঝুঁকি সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। উল্লেখিত সময়কালে দুর্যোগ অভিঘাতে ১১৪৫০ জনের মৃত্যু এবং প্রায় ৩৭.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যমানের অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে। পৃথিবীর গড় উষ্ণতা শিল্প-বিপ্লবপূর্ব পর্যায় হতে ১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ১.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেলে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদ যথাক্রমে ১.১ এবং ২ শতাংশ কমে যেতে পারে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির সাথে সাথে অতি উচ্চ শক্তিমত্তার দুর্যোগের সংখ্যাবৃদ্ধি পাচ্ছেে। বাংলাদেশের বিভিন্ন ভৌগলিক এলাকা ইতোমধ্যেই জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগের অভিঘাতে ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। কোন কোন দুর্যোগ অনুমিত সময়ের আগেই আকস্মিকভাবে সংঘঠিত হচ্ছে আবার কোন কোনটি ধীর লয়ে সংঘটিত হয়ে ক্রমেই বিস্তৃত ও তীব্রতর হচ্ছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের ১১টি জেলায় সংঘটিত আকস্মিক বন্যায় মোট ৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, কৃষি জমি-খামারসহ সব মিলিয়ে ক্ষতি হয়েছে ১৪ হাজার ২৬৯ কোটি ৬৮ লাখ ৩৩ হাজার ৫২২ টাকার। এছাড়া ৯ লাখ ৪২ হাজার ৮২১ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছিলেন ৪৫ লাখ ৫৬ হাজার ১১১ জন।

সেইভ ফিউচার বাংলাদেশ’ প্রধান সমন্বয়ক, পরিবেশ ও জলবায়ু কর্মী নয়ন সরকার বলেন, এখন বাংলাদেশের প্রতিটি স্থান জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশগত দুর্যোগপূর্ণ গ্রাম। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ঘনঘন ঘূর্ণিঝড়; সমুদ্র পৃষ্ঠ্যের উচ্চতা বৃদ্ধি, নদী ভাঙন ও লবনাক্ততার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অন্যদিকে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নীচু ও সমতল এলাকায় অতিবৃষ্টি ও উজানের ঢলে আকস্মিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এছাড়াও দেশজুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহের ফলে মানুষদের জীবন ও জীবিকা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। বাংলাদেশের আবহাওয়ার ধরণ পাল্টে গেছে; প্রতি বছর প্রতিটি দূর্যোগ নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করছে। ঘূর্ণিঝড়ের সময় ও তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, বন্যার সময়কাল দীর্ঘ হচ্ছে, তাপপ্রবাহ মাসব্যাপী থাকছে; বৃষ্টি অসময়ে হয় আবার বৃষ্টির সময়ে বৃষ্টি হয় না। বাংলাদেশ এখন বিশ্বে দূর্যোগ ঝুকিপূর্ণ দেশ হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের পিছনে অবদান না রাখলেও সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ। সাম্প্রতিক বন্যার সময়ে আমি ফেনী, নোয়াখালী ও খাগড়াছড়ি জেলায় ত্রাণ এবং পূর্নবাসন কাজ করার সময় মানুষদের দুঃখ-কষ্ট দেখেছি। তাদের তো কোনো অপরাধ ছিলো নেই। তারপরও তারা বন্যা কিংবা ঘূর্ণিঝড়ের ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়। উন্নত বিশ্ব যখন ভোগবিলাসী জীবন-যাপন করছে এদিকে আমরা একেকটি দূর্যোগের সম্মুখীন হচ্ছি। কোথায় জলবায়ু অর্থায়ন? আমরা জলবায়ু ন্যায়বিচার ও জলবায়ু ক্ষতিপূরণ চাই।

তিনি আরো বলেন, সাবেক সরকারের মুখেমুখে সবসময় টেকসই উন্নয়ন বুলি থাকলেও কাজেকর্মে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংসকারী উন্নয়ন ছিল। যার ফলে বাংলাদেশ পরিবেশগত সকল বৈশ্বিক মানদন্ডে পিছিয়ে রয়েছে; বাস্তবতাও বিশ্বে সবচেয়ে দূষিত দেশের তকমা লেগে আছে। ফলস্বরূপ জনস্বাস্থ্য, জীববৈচিত্র্য উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। যেটি এখন আর আমরা চাই না। আমরা প্রকৃত টেকসই উন্নয়ন এবং পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের সংরক্ষণ এবং পুনরুদ্ধার করার দাবি জানাই।

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা ছাড়াও বাংলাদেশ পরিবেশগত সংকটে জর্জরিত। বাংলাদেশে ৩২ শতাংশ মৃত্যু পরিবেশ দূষণের সাথে সম্পর্কিত এবং বায়ু দূষণের কারণে বছরে জিডিপির ক্ষতি হয় ৯ শতাংশ। বিভিন্ন প্রকার দূষণজনিত কারণে বাংলাদেশে ২০১৯ সালে ২ লাখ ১৫ হাজার ৮২৪ জনের মৃত্যু হয়। এরমধ্যে শুধু বায়ু দূষণের কারণেই সর্বাধিক ১ লাখ ৭৩ হাজার ৫১৫ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়াও কয়লার ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়া, দেশ জুড়ে বনাঞ্চল উজাড়, পাহাড়-টিলা কাটা, নির্বিচারে গাছ কাটা, নদী-খাল-জলাশয়, দখল-দূষণ-ভরাট করা, বন্যপ্রাণী হত্যা, দূর্বল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা রয়েছে।

পরিবেশ ও জলবায়ু কর্মী, স্বপন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে যে নেতিবাচক প্রভাব মানুষের জীবন ও জীবিকায় পড়ছে, এর অন্যতম প্রধান শিকার নারী ও শিশুরা। ইউনিসেফের ২০১৩ সালের এক জরিপে দেখা গেছে, ৮৯ দশমিক ৬ শতাংশ নারী পরিবারের জন্য পানি সংগ্রহ করে, যেখানে পরিবারের গৃহস্থালি কাজের জন্য প্রতিদিন মাইলের পর মাইল হাঁটতে হচ্ছে নারী ও কন্যা শিশুদের। লবণাক্ত পানি ব্যবহারের ফলে নারীর প্রজনন স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে। এছাড়াও পরিবেশগত দূষণের ফলে পাওয়ায় নারী ও শিশুরা বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছে। নারী ও শিশুর স্বাস্থ্যের উপর যে বিরূপ প্রভাব পড়ছে, এই পরিস্থিতিতে ঢাকার পরিবেশগত বিপর্যয় মোকাবেলায় অন্তবর্তীকালীন সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করার দাবি জানাই।

এমতাবস্থায় আজকের বৈশ্বিক জলবায়ু ধর্মঘটের আমাদের দাবিগুলোঃ প্রথমত, বিশ্ব নেতাদের কাছে দাবি, *প্যারিস এগ্রিমেন্ট বাস্তবায়ন করতে হবে। * নবায়নযোগ্য জ্বালানি বৃদ্ধি এবং জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধ করে বৈশ্বিক উষ্ণতা ১.৫ ডিগ্রিতে রাখতে হবে। *জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিজ্ঞানভিত্তিক পদক্ষেপ নিতে হবে।*লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড বাস্তবায়ন করে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে জলবায়ু ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। *গরীব দেশগুলোকে অভিযোজন সক্ষমতা বাড়াতে প্রযুক্তিগত সহায়তা করতে হবে।

দ্বিতীয়ত: বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি, *নবায়নযোগ্য শক্তির দিকে অগ্রসর হতে হবে। *জলবায়ু শরনার্থীদের টেকসই পুর্নবাসন করতে হবে। *পার্বত্য অঞ্চল ও উপকূলীয় অঞ্চলে সুপেয় পানির স্থায়ী সমাধান করতে হবে। *অভিযোজন সক্ষমতা বাড়াতে হবে। *উপকূল জুড়ে টেকসই ব্লক বাঁধ নির্মাণ এবং বনায়ন তৈরি করতে হবে। *উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষদের জীবনমান উন্নয়নে পদক্ষেপ নিতে হবে। *একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করতে হবে। *পানি দূষণ, শব্দ দূষণ ও বায়ু দূষণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। *পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য ক্ষতিকর প্রকল্প এবং দেশজুড়ে পরিবেশ দূষণকারী কার্যক্রম স্থগিত করতে হবে। *এছাড়াও দেশের পাহাড়-টিলা, বনাঞ্চল, গাছ-পালা, বন্যপ্রাণী এবং নদী, জলাশয় রক্ষা করতে হবে এবং পুনরুদ্ধারে পদক্ষেপ নিতে হবে।

সংবাদ টি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved
Design BY POPULAR HOST BD