আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
কুড়িগ্রামের রৌমারী প্রেসক্লাবে ঢুকে ভাঙচুর চালিয়েছেন উপজেলা বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী। এ সময় তারা রৌমারী প্রেসক্লাব সভাপতি সুজাউল ইসলাম সুজাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যান।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিরাপত্তা চেয়ে রৌমারী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন প্রেসক্লাব সভাপতি সুজা। রৌমারী থানার ডিউটি অফিসার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মুনির অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
থানায় দেওয়া অভিযোগে রৌমারী প্রেসক্লাব সভাপতি সুজাউল ইসলাম সুজা বলেছেন, শনিবার রাত ৯টার দিকে প্রেসক্লাবে বসে ল্যাপটপে নিউজ ড্রাফট করছিলাম। ওই সময় রৌমারী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, উপজেলা বিএনপির সদস্য আলমাস হোসেন ভোলা, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মেহেদী হাসান, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম খুশি এবং উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শামিম ইসলামসহ প্রায় ২৫-৩০ জনের একটি দল প্রেসক্লাবে ঢুকে আমাকে গালিগালাজ শুরু করেন। কারণ জিজ্ঞাসা করলে তারা বলে আমি নাকি রৌমারী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান রঞ্জুর বিরুদ্ধে স্থানীয় কয়েকজনের বক্তব্য ভিডিও করেছি। বিষয়টি আমি অস্বীকার করলে তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। আমাকে মারতে আসেন এবং প্রেসক্লাবে ভাঙচুর চালান। পরে পাশের লোকজন ছুটে এসে আমাকে নিরাপদে সরিয়ে নিলেও প্রেসক্লাবের জিনিসপত্র ভাঙচুর করেন তারা। বেরিয়ে যাওয়ার সময় আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে যান।
সুজা বলেন, ‘হামলা ও হুমকিদাতারা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তারা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান রঞ্জুর অনুসারী। তাদের হুমকির কারণে আমি বর্তমানে নিরাপত্তহীনতায় ভুগছি। আইনগত নিরাপত্তা চেয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান রঞ্জুর অনুসারীদের প্রেসক্লাবে গিয়ে বাগবিতণ্ডার বিষয়টি স্বীকার করলেও নিজের সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির। তিনি বলেন, ‘সেক্রেটারিকে নিয়ে ঘটনার জেরে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। সেক্রেটারির ভাইও সেখানে ছিল। আমি ঘটনার পর গিয়েছি। আমরা গিয়ে লোকজনকে সরিয়ে এনেছি। তারপরও কেন আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে, তা বুঝলাম না।’
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান রঞ্জু বলেন, ‘এক মামলার আসামিকে নিয়ে গিয়ে সুজা আমার বিরুদ্ধে বক্তব্য নিয়েছেন। আমার ও দলের কয়েকজন নেতাকর্মীর সম্পৃক্ততা দাবি করে আমাদের নামে অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা করেছেন। সেজন্য কয়েকজন নেতাকর্মী তাকে জিজ্ঞাসা করতে গিয়েছিল। কোনও হুমকি কিংবা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি। সে বেশি বেশি বলেছেন।’
সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার প্রশ্নে উপজেলা বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সব সাংবাদিকের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক আছে। আমরা সাংবাদিকদের সহযোগিতা করি। আপনি অন্য সাংবাদিকদের কাছে খোঁজ নিলে জানতে পারবেন। সুজার বিষয়টি ভিন্ন। রাজনৈতিক কারণে সে এভাবে বলছে।’
রৌমারী থানার এএসআই মুনির বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি ওসি ও পরিদর্শক (তদন্ত) স্যারকে জানানো হয়েছে। তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
ওসি গোলাম মর্তুজা বলেন, ‘আমি ছুটিতে ছিলাম। আজ থানায় গিয়ে বিষয়টি দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেবো।’