বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:১৯ অপরাহ্ন

লোহাগড়ায় রোগীর পেটে গজ রেখে সেলাই, ক্লিনিকের অপারেশন থিয়েটার সিলগালা

শরিফুজ্জামান, নড়াইল প্রতিনিধি :
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ২৮ বার পড়া হয়েছে

শরিফুজ্জামান, নড়াইল প্রতিনিধি :

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় সিজারিয়ান অপারেশনের সময় রোগীর পেটে গজ রেখে সেলাই দেয়ার অভিযোগে মোর্শেদা সার্জিক্যাল ক্লিনিকের অপারেশন থিয়েটার (ওটি) সিলগালা করা হয়েছে। পাশাপাশি ক্লিনিকটির সার্বিক কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে সিএন্ডবি চৌরাস্তায় অবস্থিত ক্লিনিকটিতে অভিযান পরিচালনা করেন লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবুল হাসনাত। এসময় তিনি ক্লিনিকের অপারেশন থিয়েটার সিলগালা করেন এবং ক্লিনিকের সব কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেন। অভিযানে ইপিআই প্রকল্পের প্রধান সমন্বয়কারী প্রসান্ত ঘোষ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, লোহাগড়া উপজেলা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক ইন্জি: রাজু আহমেদ বাপ্পিসহ অন্যন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ডা. আবুল হাসনাত বলেন,‘অভিযোগের ভিত্তিতে মোর্শেদা সার্জিক্যাল ক্লিনিক পরিদর্শন করি। এ সময় ক্লিনিকের বিভিন্ন অব্যবস্থাপনা যার মধ্যে ক্লিনিকের লাইসেন্স যার মেয়াদ গত ২০২২ সালের জুনে শেষ, সার্বক্ষণিক চিকিৎসক না থাকা, ডিপ্লোমা ধারী সেবিকা না থাকাসহ বিভিন্ন অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়। যে কারনে ক্লিনিকের অপারেশন থিয়েটার সিলগালা এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ক্লিনিকের সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া অভিযুক্ত চিকিৎসককে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকল অপারেশন কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, লোহাগড়া উপজেলার ইতনা ইউনিয়নের দক্ষিণ পাংখারচর গ্রামের শওকত মোল্যার স্ত্রী বাকপ্রতিবন্ধি সুমি খানম সন্তান সম্ভাবনা হওয়ায় স্বজনরা গত শনিবার (২২ নভেম্বর) ভোরে লোহাগড়া উপজেলার সিএন্ডবি রাস্তায় চৌরাস্তায় অবস্থিত মোর্শেদা সার্জিক্যাল ক্লিনিকে ভর্তি করেন। এ সময় সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক নেওয়াজ মোর্শেদ, আল খাদিজা সম্পা, ক্লিনিক মালিক জাকির হোসেন, ম্যানেজার সুমন, সেবিকা সাবিনাসহ রোগী সুমিকে সিজারিয়ান অপারেশন করতে পরামর্শ দেন। পরে ১৩ হাজার টাকা চুক্তিতে ক্লিনিকের অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে তার সিজারিয়ান অপারেশন করেন চিকিৎসকরা। এসময় সুমির একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। অপারেশনের পর রোগীর পেট ফুলে যায় এবং সে সার্বক্ষণিক অসুস্থ থাকে।

এরপরে সিজারিয়ান অপারেশন করা দুই চিকিৎসককে জানালে তারা জানায় রোগীর গ্যাসের ব্যাথা রয়েছে। পরবর্তীতে ২৭ নভেম্বর ছাড়পত্র দিয়ে দেয়। পরবর্তীতে রোগীর অবস্থা আরো খারাপ হওয়ায় গত ৪ ডিসেম্বর একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দেখানো হয়। মেডিকেল রিপোর্ট দেখার পর সেই চিকিৎসক রোগীকে খুলনা মেডিকেলে নেয়ার পরামর্শ দেন। সেই মোতাবেক গত ৭ ডিসেম্বর খুলনা গাজী মেডিকেলে সুমিকে নিয়ে গেলে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জানান, সিজারিয়ান অপারেশনের সময় রোগীর পেটে নাড়ি কেটে যায়, ঘটনাটি জেনেও সঠিক চিকিৎসা না করে গজ দিয়ে নাড়ি চেপে সেলাই দেয়া হয় যার ফলে সেখানে পচন ধরে গেছে। এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রোগী সুমির ফুফাতো ভাই কাজী ইয়াজুর রহমান বাবু সিভিল সার্জন নড়াইল বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

সংবাদ টি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ