আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
কুড়িগ্রাম জেলার নারী শিক্ষার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কুড়িগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। এই প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ওয়েবসাইটটি সাইবার হামলার শিকার হয়েছে। ভারতীয় হ্যাকাররা ওয়েবসাইটটি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। স্কুলটির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। পরে স্কুলটির ওয়েবসাইট ব্রাউজ করতে গেলে হ্যাকড হওয়ার সত্যতা পাওয়া গেছে।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলছেন, গণঅভ্যুত্থানের পর বিদ্যালয় খুললে তারা ওয়েবসাইটটি হ্যাকড হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। ধারণা করা হচ্ছে, কোটা সংস্কার ও সরকার পতনের আন্দোলন চলাকালে ভারতীয় হ্যাকাররা ওয়েবসাইটটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সাইটটি নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করতে পারেনি স্কুল কর্তৃপক্ষ।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের নির্দেশনা ও নোটিশ এই সাইটে প্রকাশ করা হতো। শিক্ষার্থীরা ওয়েবসাইট থেকেই যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করতো। কিন্তু সাইটটি হ্যাকড হওয়ায় তা আর সম্ভব হচ্ছে না।
স্কুলটির সহকারী শিক্ষক রেমাউল ইসলাম বলেন, স্কুলের নিজস্ব ওয়েবসাইট হ্যাক হওয়ার বিষয়টি আমরা শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে জানতে পারি। সাইটটি ডেভেলপ করেছে ‘পি-সফট করপোরেশন’ নামে একটি আইটি প্রতিষ্ঠান। এটির রক্ষণাবেক্ষণও তারাই করে। হ্যাকড হওয়ার বিষয়টি তাদের জানানো হয়েছে। তারা সাইটটি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে।
‘প্রায় তিন সপ্তাহ আগে আমরা পি-সফট করপোরেশকে সাইট উদ্ধারের জন্য জানিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত সাইটটির নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়নি।’ যোগ করেন শিক্ষক রেমাউল।
স্কুলটির ওয়েবসাইট ঠিকানা https://www.kurigramgghs.edu.bd/ – ব্রাউজ করে দেখা গেছে, তাতে লোগো সহ লেখা ‘HACKED BY INDIAN CYBER DAYAN SQUAD’।
শুধু তাই নয়, হ্যাকার গ্রুপটি বাংলাদেশ সরকারকে সতর্ক করে লিখে রেখেছে, ‘হ্যালো প্রিয় সরকার! তোমাদের কিছু লোকজন আমাদের ভারতীয় সাইবার স্পেস স্পর্শ করেছে, আমরা প্রতিশোধ নেবো। আমরা ভারতীয়। আমরা গোটা বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছি। ভারতীয়দের ঘাটতে এসো না।’
হ্যাকাররা ওয়েবসাইটটি পুনরুদ্ধার করে নিরাপত্তা হালনাগাদ করার পরামর্শ দিয়েছে। একইসঙ্গে পরে সতর্ক থাকার কথাও জানিয়েছেন তারা।
সাইটটি ভারতীয় হ্যাকাররা হ্যাক করেছে নিশ্চিত করে পি-সফট করপোরেশনের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এগুলো ভারতীয় হ্যাকার গ্রুপের কাজ। ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে হাজারেরও বেশি সাইটে তারা সাইবার হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে আমাদের কোম্পানির প্রায় ৭০টি সাইট হ্যাকড হয়েছিল। বেশির ভাগ ঠিক করা হয়েছে। কুড়িগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাইটটি দ্রুত ঠিক করা হবে।’
ভারতীয় হ্যাকার গ্রুপ নিয়মিত বাংলাদেশে সাইবার হামলা চালায় বলেও জানান তিনি।