মোঃ শফিকুল ইসলাম স্টাফ রিপোর্টার চারঘাট (রাজশাহী)।
রাজশাহীর চারঘাটে সরকারী খাস জমি দখল করে স্কুলের বাউন্ডারি প্রাচীর দেয়াকে কেন্দ্র করে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাজারের ব্যবসায়ীসহ এলাকাবাসীর মাঝে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। যে কোন সময় স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাজারের ব্যবসায়ীসহ এলাকাবাসীর সঙ্গে ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের সংঘর্ষ। গতকাল সোমবার সকালে সরজমিনে উপজেলার ভায়ালক্ষিপুর ইউনিয়নের পুঠিমারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং বাজার ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায় এমন তথ্য। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দাবি সেখানে যে প্রাচীর হচ্ছে সেটা কি খাস জমিতে হচ্ছে, হলে বিষয়টি তিনি দেখছেন বলে জানান তিনি।
জানা যায়,দীর্ঘদিন ধরে পুঠিমারী রাস্তার পাশে এবং পুঠিমারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের শেষ প্রান্তে সাপ্তাহিক হাট বসে আসছে। যা সরকারী খাস জমি বলে দাবি করেন বাজারের ব্যবসায়ীসহ এলাকাবাসী। হঠাৎ করে গত কয়েক দিন ধরে সেই খাস জমিতে হাট বসার জায়গায় বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মান কাজ শুরু করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে বাজার ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর সঙ্গে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরোধ সৃষ্টি হয়। বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যালয় প্রাচীর নির্মানের কাজ। ব্যবসায়ীসহ এলাকাবাসীর দাবি খাস জমি রেখে বিদ্যালয়ের জমির উপর নির্মান করা হোক বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর। সেটা না করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জোর করে সরকারী খাস জমির উপর সীমানা প্রাচীর নির্মান করছেন।
মনির হোসেন নামের এক সবজি বিক্রেতা দাবি করে বলেন, বিদ্যালয়ের জমি রয়েছে ১.৩৫ একর। পাশাপাপাশি সেখানে সরকারী খাস জমি রয়েছে ১.৩৫ একর। আমরা গত ৩০ বছর ধরে আমরা জেনে আসছি পুঠিমারী সাপ্তাহিক হাট যেখানে বসছে, খেলার মাঠ সংলগ্ন সরকারী খাস জমিতে। এখন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জায়গাটি বিদ্যালয়ের দাবি করে তারা সীমানা প্রাচীর নির্মান করছেন। আমরা জীবন দিয়ে হলেও এই অবৈধ সীমানা প্রাচীর কোন ভাবেই করতে দিতে পারি না। আমরা ব্যবসা করে পেট চালায়।
চা বিক্রেতা বজলুর রহমান বলেন, এখানে সাপ্তাহিক হাট বসে। সরকার এখান থেকে রাজস্ব পায়। কার স্বার্থে, কার পরামর্শে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সরকারী খাস জমির উপর প্রাচীর নির্মান করছে। আমরা চাই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের জমির উপর প্রাচীর নির্মান করুক। আর জনগনের দাবি উপেক্ষা করে জোর করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রাচীর নির্মান করলে আমরা ব্যবসায়ীরা পরিবারের সন্তান সন্ততি নিয়ে রাস্তায় শুয়ে পড়বো। আমাদের জীবনের বিনিময়ে যদি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রাচীর দেয়, তো দিক। আমরা মরে যাব।
এ দিকে এলাকাবাসীর দাবি, যেখান দিয়ে প্রাচীর নির্মান করা হচ্ছে, সেটি সরকারী খাস জমি বা হাটের জায়গা না হলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রাচীর দিক তাতে আমাদের কোন সমস্যা নেয়। তবে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর কথা বিবেচনা করে সরকারী সার্ভেয়ার নিয়োগ করে প্রকৃত পক্ষে বিদ্যালয়ের জমিতে প্রাচীর নির্মানের ব্যবস্থা করার যাবতীয় ব্যবস্থা নেয়া দাবি এলাকাবাসী।
বিষয়টি সম্পর্কে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছাপিয়া খাতুন বলেন, সম্পুর্ন বিদ্যালয়ের জমিতেই সীমানা প্রাচীর নির্মান করা হচ্ছে। এখানে হাটের বা সরকারী খাস জমির উপর প্রাচীর নির্মান করা হচ্ছে না। প্রকৃত পক্ষে স্কুলের পুরাতন ভবন রয়েছে সরকারী খাস জমিতে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জান্নাতুল ফেরদৌস জানান সেখানে যে প্রাচীর হচ্ছে সেটা কি খাস জমিতে হচ্ছে, হলে বিষয়টি তিনি দেখছেন বলে জানান তিনি।