শেখ সুমন নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আল্লামা সৈয়দ বাহাদুর শাহ মুজাদ্দেদী বলেন , বাংলাদেশের মধ্যে এখন একটা অশনি সংকেত দেখা যাচ্ছে। এই বাংলাদেশ অলি আল্লাহর দেশ, আল্লাহর অলিরা আমাদেরকে মানবতার শিক্ষা দিয়েছেন, অসাম্প্রদায়িক শিক্ষা, সহমর্মিতার শিক্ষা, দেশ প্রেমের শিক্ষা।
আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে, বিশেষ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্যান্য উপদেষ্টা যারা রয়েছেন তাদের সকলকে আমি সবিনয় ভাবে বলছি, এক শ্রেণীর লোকেরা চায় এদেশটা যেন সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্বের মধ্যে জড়িয়ে যায়। তারা কখনো কখনো মন্দিরে আক্রমণ করে। কখনো কখনো গির্জায় আক্রমণ করে। আবার এখন দেখা যাচ্ছে তারা সুন্নী সম্প্রদায়ের বিভিন্ন লোকদের উপর জুলুম অত্যাচার করে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ পদ থেকে, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে জোর করে তারা পদ ত্যাগ করাচ্ছে। বিভিন্ন মসজিদগুলো তারা দখল করার পায়তারা করছে। মাজারগুলোর উপর আক্রমণ করছে। তাই আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলব, আপনারা অচিরেই এই সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান, এই সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখুন নতুবা এরা দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে দিবে না। এরা এদেশের মধ্যে অশান্তি সৃষ্টি করতে থাকবে। যদি এরা আরো বেশি বাড়াবাড়ি করে তাহলে এই দেশটা একদিন শান্তির দেশ নয় বরং সাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে পরিণত হবে। তখন ঘরে ঘরে মারামারি হবে, এলাকায় এলাকায় মারামারি হবে, ওয়াহাবী-সুন্নী দাঙ্গা হবে সেই দাঙ্গা থামানোর শক্তি এই সরকারের থাকবে না।
আমি বলতে চাই, ঘুমন্ত সিংহের লেজ দিয়ে যদি ওরা কান খোঁচাতে চায় তাহলে এর পরিণতি অত্যন্ত ভয়ানক হবে। আল্লাহর অলিরা এখনো ঘুমিয়ে আছে। আমি বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের কেন্দ্রীয় সভাপতি হিসেবে এবং ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের চেয়ারম্যান হিসেবে দ্ব্যর্থহীনভাবে বলে দিতে চাই, আল্লাহর অলিদের বিরুদ্ধে তোমাদের এই অশুভ তৎপরতা বন্ধ করো নতুবা আল্লাহর অলিরা যদি জেগে যায় আর আমি যদি ডাক দিই এদেশের মধ্যে নজদী-ওয়াহাবীর চামচারা পালানোর পথ পাবে না। আমরা ঈমানের ব্যাপারে বিন্দুমাত্র ছাড় দিতে রাজি নই। আমাদের পূর্বপুরুষরা আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন, বাতিল যত বড়ই শক্তিশালী হোক তোমার যা কিছু আছে তাই নিয়ে তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করতে হবে।
আমরা দুনিয়ার সম্পদের ব্যাপারে, দুনিয়াবী বিভিন্ন ব্যাপারে ছাড় দিতে রাজি আছি কিন্তু ঈমানের ব্যাপারে ছাড় দিতে রাজি নাই। আমি দেখতে পাচ্ছি, যারা আগে বিভিন্ন মাজারে বোমা মারার কারণে জেলে গিয়েছে তারা নির্দোষ খালাস পেয়ে যাচ্ছে। এটা জাতির জন্য একটি অশনি সংকেত।
আমরা শান্তিতে বিশ্বাসী, ইসলাম শান্তির ধর্ম, ইসলাম সহমর্মিতার ধর্ম, ইসলাম ভাতৃত্ববোধের ধর্ম, ইসলাম দেশ প্রেমের ধর্ম। আমরা সকল জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে মিলেমিশে এই দেশটাকে উন্নতির দিকে নিতে চাই। এদেশের মধ্যে শান্তিতে আমরা বসবাস করতে চাই। তাই সরকারের কাছে অনুরোধ করব, সরকার যেন অচিরেই এদের বিরুদ্ধে জোড়ালো পদক্ষেপ নেয় যারা দেশকে অশান্ত করতে চায়। আল্লাহ এদেশকে হেফাজত দান করুন, বাতিল শক্তি নজদী, সালাফী, ওয়াহাবীদের থেকে আল্লাহ এদেশকে হেফাজত করুন।
অন্যায়কে আমরা অন্যায় হিসেবেই জানি, ন্যয়কে ন্যয় হিসাবেই জানি। কোনো মাজারের মধ্যে ইসলাম বিরোধী কোনো কর্মকাণ্ড যদি হয়ে থাকে তাহলে প্রশাসন নিয়ে বসুন, ইসলাম বিরোধী ঐ কর্মকাণ্ডগুলো বন্ধ করে দিন। কিন্তু অলি আল্লাহর মাজার ভাঙ্গার স্পার্ধা আপনাকে কে দিয়েছে? আমাদের আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের আকিদা মাজার শরীফে কোনো সেজদাহ চলবে না, এটা হারাম। সেজদাহ একমাত্র আল্লাহর জন্য। মাজারে সুন্নী যায় জিয়ারতের জন্য। বাজে লোকেরা যদি মাজারের আশে পাশে গাজা খায়, বাজে কাজ করে এগুলো আমরা হারাম মনে করি। এগুলোর সাথে সুন্নীয়তের সাথে, অলি আল্লাহর সাথে কোনো সম্পর্ক নাই।