আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
মুজিববর্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর ও সোলার সিস্টেম দেওয়ার বিনিময়ে প্রায় ৬০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী, কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জাকির হোসেন এবং তার স্ত্রী সুরাইয়া সুলতানাসহ তিন জনের নামে মামলা করা হয়েছে। কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার চর গয়টাপাড়ার বাসিন্দা মোকছেদ আলী বাদী হয়ে গত বুধবার (২৮ আগস্ট) কুড়িগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (রৌমারী আমলি আদালত) মামলাটি করেন।
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশের জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ওসিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। বাদীর আইনজীবী খাদেমুল হাসান এমজী রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে চলতি বছরের গত ২৬ জুন একই অভিযোগে সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, তার স্ত্রী সুরাইয়া সুলতানা ও তাদের এক নিকটাত্মীয় বরাবর আইনজীবীর মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান বাদী মোকছেদ আলী। নোটিশ পাওয়ার পরও ভুক্তভোগী গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারগুলোকে টাকা ফেরত না দেওয়ায় মামলা করেছেন বলে আরজিতে বলা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) জাকির হোসেন, তার স্ত্রী সুরাইয়া সুলতানা এবং নিকটাত্মীয় বাবুল মন্ডল ২০২০-২০২১ অর্থবছরে রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙা, চর শৌলমারী ও বন্দবের ইউনিয়নের ১৯১টি ভূমিহীন-গৃহহীন গরিব ও দুস্থ পরিবারের জন্য পাকা ঘর নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে দুই দফায় ৬০ লাখ টাকা এবং ৭২টি পরিবারকে সোলার সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আরও ৭২ হাজার টাকা নেন। জাকির হোসেনের উপস্থিতিতে তার রৌমারী উপজেলার বাসভবনে স্ত্রী সুরাইয়া সুলতানা ও নিকটাত্মীয় বাবুল মন্ডল এই টাকা গ্রহণ করেন।
বাদী দাবি করেছেন, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তিন মাসের মধ্যে ঘর ও সোলার সুবিধা দেওয়ার কথা থাকলেও টাকা প্রদানকারী পরিবারগুলো কেউ কোনও ঘর কিংবা সোলার সুবিধা পাননি। পরে টাকা ফেরত চাইলে অভিযুক্তরা টালবাহানা শুরু করেন। ২০২৪ সালের ২৬ জুলাই স্থানীয় লোকজনসহ মোকছেদ আলী টাকা ফেরত চাইতে গেলে জাকিরসহ অভিযুক্তরা টাকা গ্রহণ করার কথা স্বীকার করলেও তা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানান। সাবেক প্রতিমন্ত্রী তার স্ত্রী ও নিকটাত্মীয়সহ ওই টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে মামলার আরজিতে দাবি করা হয়েছে।
আদালত বাদীর আরজি গ্রহণ করে তদন্তের আদেশ দিয়েছেন। আদেশে বলা হয়েছে, অভিযোগের সত্যতা সম্পর্কে তদন্ত প্রয়োজন। ওসি ডিবি, কুড়িগ্রাম তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করবেন। আগামী ৮ অক্টোবর প্রতিবেদন দাখিলের পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাদীর আইনজীবী খাদেমুল হাসান এমজী বলেন, ‘মামলা হয়েছে। আদালত ডিবির ওসিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।’