আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার ঐহিত্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শরীফের হাট এম ইউ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রউফের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম, অতিরিক্ত টাকা আদায়, স্বেচ্ছাচারিতা, নিয়োগ বাণিজ্য রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোসহ নানা অনিয়ম- দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেছে।
এসব অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরে শনিবার (৩১ আগস্ট) সকালে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বিদ্যালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশে বক্তারা বলেন প্রধান শিক্ষক আব্দুর রউফ যোগদানের পর থেকে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা এবং লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি সহ বিভিন্ন কলা কৌশলের বিভিন্ন সময় নানা ধরনের কারণ দেখিয়ে শিক্ষার্থীের নিকট থেকে অর্থ হাতিয়ে আসছে। এসময় তারা ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, সেশন ফি ৯০০ টাকা, আইডি কার্ড বাবদ ২০০ করে টাকা তিন বছর আগে নিলেও এখন পর্যন্ত আইডি কার্ড দেয়া হয় নাই। এছাড়াও প্রশংসা পত্র, ট্রান্সফার সার্টিফিকেটে ২ হাজার টাকা নেয়া হয়। এদিকে সদ্য নিয়োগ দিয়ে অর্থ বানিজ্যের অভিযোগ তুলে ধরেন এই শিক্ষার্থীরা। এছাড়া আরও একাধিক অভিযোগ রয়েছে ওই প্রধান শিক্ষককের বিরুদ্ধে।
তারা আরও জানান, প্রধান শিক্ষক কৌশল পরিবর্তন করে আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন শিক্ষকসহ সিন্ডিকেট করে নানা অনিয়ম দুর্নীতি শুরু করেন। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায়, বিনা রশিদে অর্থ আদায়, ভুয়া বিল করে টাকা আত্মসাত, কোচিং বাণিজ্য, উপবৃত্তির শিক্ষার্থী নির্বাচনে অনিয়মসহ নানা অনিয়ম দুর্নীতি শুরু করেন। এমনকি বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান তলানিতে গিয়ে ঠেকলেও শিক্ষার মান উন্নয়নে তার মাথা ব্যথা নেই। তৎকালীন সরকারের ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের ছত্রছায়ায় প্রধান শিক্ষক নির্বিঘ্নে নিজের অপকর্ম চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়। শিক্ষার্থীরা বলেন- প্রধান শিক্ষক কখনো শ্রেণি কক্ষে পাঠদান করতেন না। এমনকি এসব অনিয়ম নিয়ে এলাকার কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে উল্টো রাজনৈতিক নেতাদের দিয়ে হুমকি-ধমকি ও নানাভাবে হয়রানি করা হতো।
এছাড়াও আব্দুর রউফ যোগদানের পর থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান কমতে কমতে তলানিতে ঠেকেছে। উপজেলা পর্যায়ে ধারাবাহিকভাবে শীর্ষে থাকা এ বিদ্যালয়টি বিগত এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে উপজেলা পর্যায়ে অনেক পিছিয়ে আছে। এমনকি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের জিপিএ-৫ এর হারও অনেক কমেছে।
সমাবেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি আমলে নিয়ে অবিলম্বে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ, বিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়ন ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার দাবি জানান। এসব কর্মসূচিতে বিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী, অভিভাবক সহ সর্বস্তরের জনসাধারণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন।
অভিযোগের বিষয়ে শরীফের হাট এমইউ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রউফ জানান, শিক্ষার্থীদের সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা। অযৌক্তিক কারণে তিনি পদত্যাগ করবেন না। বিভিন্ন বিষয়ে অর্থ আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন এসব অর্থ সব স্কুলে নেওয়া হয় আমরাও নেই তাছাড়া অনেকের কাছ থেকে নেওয়াও হয় না। তবে তার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়টি সত্য নয় দাবি করে তিনি বলেন, ব্যক্তি আক্রোশে তার বিরুদ্ধে এরকম অভিযোগ তোলা হচ্ছে।