নিজস্ব প্রতিবেদক।
কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার ১৮ নম্বর কোনাখালী ইউনিয়নের তরুণ ও জনপ্রিয় নেতা ডা. নুরুল কবির। রাজনীতির বাইরেও তিনি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মানবিক কাজে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। এলাকার মানুষের কাছে ছিলেন গ্রহণযোগ্য ও নির্ভরতার নাম।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়েও তিনি বিএনপির রাজপথে সক্রিয় ছিলেন। নানা প্রতিবাদ, সভা-সমাবেশে নেতৃত্ব দিয়েছেন সাহসিকতার সঙ্গে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হয়ে জনগণের মন জয় করলেও অল্পের জন্য জয়ী হতে পারেননি।
২০২৫ সালের ১২ এপ্রিল বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় ও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী আলহাজ সালাহউদ্দিন আহমদের সুপারিশে তাকে কোনাখালী ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক করা হয়। মোহাম্মদ ইউনুসকে রাখা হয় সদস্য সচিব পদে। ঘোষণার পর সাধারণ কর্মীদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়, দল পাবে নতুন গতিপথ।
কিন্তু হঠাৎ করেই মাত্র দুই মাস না যেতেই বিনা কারণ, বিনা নোটিশে তাকে আহ্বায়ক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তার স্থলে সিনিয়র সহসভাপতি আবুল কালামকে আহ্বায়ক হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এ ঘটনায় এলাকায় প্রতিবাদের ঝড় উঠে। কর্মী-সমর্থক, যুবক, ছাত্র সবাই হতবাক।
বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা এবং সাধারণ জনগণ জানতে চান কি এমন অপরাধ করেছিলেন ডা. নুরুল কবির? কেন তার মতো নিবেদিতপ্রাণ নেতাকে পদচ্যুত করা হলো?
নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে ডা. নুরুল কবির বলেন, “আমি এলাকার কিছু ভাঙা রাস্তা চকরিয়া উপজেলা ইউএনও’ আতিকুর রহমানের আশ্বাসে ব্যক্তিগত অর্থে সংস্কার করতে শুরু করি। নদীপাড়ের উত্তোলিত বালু ব্যবহার করতে গেলে স্থানীয় বালু মহলের কয়েকজনের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হয়।”
“এই বিষয়টি বাড়িয়ে তুলে আমার বিরুদ্ধে সালাহউদ্দিন আহমদ মহোদয়কে অভিযোগ দেওয়া হয়। এর জেরে আমাকে কোন কারণ না দেখিয়ে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।”
তিনি বলেন, “যদি আমার কোনো ভুল হয়ে থাকে, তাহলে কারণ দর্শানো চিঠি দেওয়া যেত। ওয়ার্ড কমিটি গঠন করে কাউন্সিল করেও নতুন আহ্বায়ক নির্বাচন করা যেত। কিন্তু এই আচমকা অপসারণ অন্যায় ও অসম্মানজনক।”
তিনি আরও বলেন, “আমি এলাকার জন্য কাজ করতে চেয়েছি। দল ও জনগণের কল্যাণে কাজ করাই ছিল আমার উদ্দেশ্য। অথচ পুরস্কার হিসেবে হারালাম আমার পদ।”
এলাকার সাধারণ মানুষের অভিব্যক্তি, “এটা যেন উপকারের লাঠির গুতা।” যে ব্যক্তি নিজ অর্থে রাস্তা সংস্কারের উদ্যোগ নেন, তাকেই আজ পদচ্যুত করা হলো। অনেকে এটিকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলেও মনে করছেন।
শেষ পর্যন্ত ডা. নুরুল কবির বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে সঠিক তদন্ত ও ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়েছেন।