আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
সমকামিতা ও দুর্নীতি অভিযোগে জেলা প্রশাসন পরিচালিত কুড়িগ্রাম কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হারুন-অর-রশিদকে অধ্যক্ষ পদ থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, দাবি ও জেলা প্রশাসন কার্যালয় ঘেরাওয়ের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে গভর্নিং বডি।
রবিবার (২৫ আগস্ট) জেলা প্রশাসক ও গভর্নিং বডির সভাপতি মো. সাইদুল আরীফ স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের করা অভিযোগ, স্থায়ী বরখাস্তের দাবি ও উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় উপস্থিত শিক্ষক এবং গভর্নিং বডির কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে আলোচনা করে হারুন-অর-রশিদকে কুড়িগ্রাম কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ পদ থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হলো।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষ হারুন-অর-রশিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, রাজনীতি এবং দুশ্চরিত্রের অভিযোগ এনেছেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, ঘেরাও এবং এই মুহূর্তে স্থায়ী বরখাস্তের দাবি ওঠায় তাকে অধ্যক্ষকের পদ থেকে স্থায়ী বরখাস্ত করা হলো।
এর আগে সদ্য সাবেক অধ্যক্ষ হারুন-অর-রশিদের বিরুদ্ধে সমকামিতাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। সম্প্রতি এক কিশোরের সঙ্গে হারুন-অর-রশিদের একটি ‘আপত্তিকর’ ভিডিও কলের ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্তের দাবি তোলেন ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায়ে গত বৃহস্পতিবার ও আজ রবিবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করে স্লোগান দিতে থাকেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরে সার্বিক দিক বিবেচনায় হারুন-অর-রশিদকে স্থায়ী বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেয় গভর্নিং বডি।
তবে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) ও আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীকে এভাবে স্থায়ী বরখাস্তের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জেলায় কর্মরত শিক্ষকেরা।
শিক্ষার্থীদের দাবি ও গভর্নিং বডির সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ হারুন-অর-রশিদকে ফোন দিলে তিনি কল কেটে দিয়ে ফোন বন্ধ করে দেন। ফলে তার মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক ও প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির সভাপতি মো. সাইদুল আরীফ বলেন, ‘উদ্ভূত পরিস্থিতিতে স্থায়ী বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার (বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ) বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত হবে।’