বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৫২ পূর্বাহ্ন

চৌগাছায় ডাক্তারের ভুলে সিজার হওয়া মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ

মোঃ আসিফ ইকবাল রকি যশোর প্রতিনিধি
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫
  • ৫৮১ বার পড়া হয়েছে

মোঃ আসিফ ইকবাল রকি
যশোর প্রতিনিধি

যশোরের চৌগাছায় ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় সিজার হওয়া এক মায়ের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার সকাল সাড়ে ৮ টায় ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই মায়ের মৃত্যু হয়। তবে সুস্থ্য আছে সিজারে জন্ম নেয়া ছেলে শিশুটি। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারসহ এলাকায় শোকের ছাঁয়া নেমে এসেছে। তবে চিকিৎসক, স্বজনদের দাবি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন।

নিহতের স্বজন ও ক্লিনিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ ফের্রুয়ারী সন্তান সম্ভাবা হাসনাহেনাকে (২৫) চৌগাছার মায়ের দোয়া ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। তিনি পৌরসভার বাকপাড়া মহল্লার তৌহিদুর রহমানের স্ত্রী। ওই রাতেই তাকে সিজার করেন ডাক্তার নাজমিন পারভিন রিমি এবং রোগাীকে অজ্ঞান করেন ডাঃ আবু সায়েম। সিজারে অংশ নেয়া দুই জনই স্বামী স্ত্রী বলে জানা গেছে। যথারীতি সিজার সম্পন্ন হয় এবং হাসনাহেনা পুত্র সন্তানের মা হন। এক সপ্তাহ ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়ে যথারীতি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ রোগীকে ছাড়পত্র দেন, রোগী ফিরে যান বাড়িতে। তবে সুস্থ্য না অসুস্থ্য অবস্থায় তাকে ক্লিনিক থেকে বাড়িতে আনা হয় দাবি স্বজনদের। কিছু দিন যেতে না যেতেই মারাত্মক অসুস্থ্যবোধ করতে থাকেন সিজার হওয়া মা হাসনাহেনা।

এরপর প্রথমে যশোর সদর হাসপাতাল তারপর ভর্তি করা হয় কুইন্স হাসপাতালে। সেখানে স্বাস্থ্যের কোনই উন্নতি না হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য নেয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে ভর্তির পর চলে উন্নত চিকিৎসা কিন্তু শেষমেষ সকলকে কাঁদিয়ে আজ (সোমবার) হাসনাহেনা দুই শিশু সন্তানকে এতিম করে চলে যান না ফেলার দেশে।
মরহুমার স্বামী তৌহিদুর রহমান, স্বজন সাইফুল ইসলাম, খালেদুর রহমান, সজিব হোসেন বলেন, আমরা জানতে পেরেছি। সিজার করার সময় হাসনাহেনার একটি নাড়ি কাটা আর একটি ছিদ্র করে ফেলেছেন ওই ডাক্তার। পরে যেনতেন ভাবে ওই নাড়ি সেলাই করা হয়েছে। এরপর সেখানে ইনফেকশন হয়ে আজ এই পরিনতি।
এ ব্যাপারে মায়ের দোয়া ক্লিনিকের যৌথ মালিকানার একজন মালিক আব্দুস সামাদ বলেন, আমরা চিকিৎসক নিয়ে এসে সিজার করায় এবং রোগীর নিকট থেকে নির্ধারিত একটি ফি নেয়া হয়। অপারেশনের পর রোগীর সেবা যতেœ কোনই ত্রুটি থাকে না যেমনটি হাসনাহেনার বেলাতেও হয়নি। এটি কেন ঘটেছে তা বলা মুশকিল।
এ ব্যাপারে ডাক্তার নাজমিন পারভীন রিমি কথা না বললেও তার স্বামী অজ্ঞান করা চিকিৎসক আবু সায়েম বলেন, স্বজনদের অভিযোগ সত্য নয়, অপারেশন সুন্দর ভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। রোগী এক সপ্তাহ পর যথারিতী বাড়িতে গেছে। যদি নাড়ি কেটে ফেলা হতো তাহলে দেড় মাস কিন্তু তিনি সুস্থ্য থাকতে পারতেন না। এরপর কি কারনে তিনি অসুস্থ্য হয়েছেন তাও আমরা জানিনা। অসুস্থ্য হলে তারা আমাদের না জানিয়ে যশোর পরে ঢাকায় নিয়ে গেছে।

এ দিকে সোমবার দুপুরের পরপরই মরহুমা হাসনাহেনার মরদেহ তার পিতৃলয় যশোর সদরের হৈবতপুর ইউনিয়নের বানিয়ালি গ্রামে পৌছালে সেখানে এক হৃদয় বিদারক অবস্থার সৃষ্টি হয়। আসরের নামাজের পর নিজ গ্রামে জানাজা শেষে পৈত্রিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়।

সংবাদ টি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ