উজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁ প্রতিনিধি।
নওগাঁর পত্নীতলায় ভুয়া সনদে চাকরি করার অভিযোগ উঠেছে গগনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে আইসিটি বিষয়ের শিক্ষিকা মোসা. সুরাতুন জান্নাতের বিরুদ্ধে। তিনি দীর্ঘ ২২ বছর শিক্ষকতা করে যাচ্ছেন অনায়াসে। অভিযোগ উঠেছে স্বামী একই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হওয়ার সুবাদে বছরের পর বছর এই সুযোগটা কাজে লাগিয়েছেন তিনি। দীর্ঘ ২২ বছর থেকে বেতন-ভাতা উত্তোলন করে যাচ্ছেন। এরফলে সরকারি কোষাগার থেকে অর্ধকোটি টাকা উত্তোলন করেছেন তিনি। বিষয়টি জানাজানি হলে গত বছরের ১৪ মে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মঊশি) মহাপরিচালক, আঞ্চলিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিতভাবে জানালেও এর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ এসেছে গণমাধ্যমকর্মীর কাছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, শিক্ষিকা মোসা. সুরাতুন জান্নাত জাতীয় বহুভাষী সাঁটলিপি প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমি (নট্রামস) বগুড়ার ধুনট থেকে পাস করা একটি নিবন্ধন সনদ দিয়ে ২০০১ সালে গগনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে আইসিটি বিষয়ের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ নিয়েছেন। হাতে আসা সেই সনদের রোল নাম্বার দিয়ে অনলাইনে সার্চ দিলে কোন তথ্য আসেনা। পরবর্তীতে সেই সনদে লেখা বগুড়া ধুনট শাখায় যোগাযোগ করলে এই শাখার কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।সরেজমিনে ধুনট বাজারে গিয়ে খোঁজাখুঁজির পর তৎকালীন প্রশিক্ষণ সেন্টারের দুইজন পরিচালকের তথ্য পায়। তথ্য অনুযায়ী তন্দ্রা প্রশিক্ষণ একাডেমীর পরিচালক তপন কুমার দাসের সঙ্গে দেখা কথা হয়। তিনি কালবেলাকে জানান, আমি ২০০০ সাল থেকে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সেন্টার চালু করেছি। কিন্তু কখনও ধুনটে এই প্রশিক্ষণ একাডেমীর নাম শুনিনি। অপর একজন প্রশিক্ষক মো. ইউনুস আলীর গ্রামের বাড়ি মানিকপটল গ্রামে গিয়ে তার সঙ্গে কথা হয়। ইউনুস আলী কালবেলাকে জানান, আমি প্রশিক্ষণ সেন্টার চালু করি ১৯৯৭-৯৮ সালে। এই এলাকায় আমিই প্রথম। আমরা যে সনদ দিয়েছি সেখানে জাতীয় বহুভাষী সাঁটলিপি প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমি (নট্রামস) লেখার পাশাপাশি আমাদের প্রশিক্ষণ সেন্টারের নাম এবং পুরো ঠিকানা লিখে দিয়েছি। এই ধুনটে আমার জানা মতে আমরা দুইজন ছাড়া কেউ ছিলো না। তবে আমি শুনেছি অন্ধকার ঘরে সেই সময় বিনা প্রশিক্ষণে কিছু জাল সনদ মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিক্রি করা হতো।শিক্ষক সুরাতুন জান্নাতের নিয়োগের সময় দেওয়া সনদের রোল নাম্বার ৫০, রেজিস্টে্রশন নাম্বার ৫৫, ব্যাচ নাম্বার ৩০, শিক্ষা ব্যাচের সাল ১ জানুয়ারি ২০০১ থেকে ৩০ জুন ২০০১ পর্যন্ত। এমপিওতে তার ইনডেক্স নাম্বার-৫৬৭১৭৮এদিকে সনদটি ভুয়া জেনেও মোসা. সুরাতুন জান্নাত দীর্ঘদিন থেকে দাপটের সঙ্গে শিক্ষকতা করে আসছেন। যদি কোন শিক্ষক বা সচেতন মহল এই বিষয়ে কথা বলতেন তাহলে তাকে দলীয় আ.লীগের ক্ষমতা ও তার স্বামী ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোয়াজ্জেম হোসেনের ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি দিতেন। জাল সনদের বিষয়ে জানতে চাইলে মোসা. সুরাতুন জান্নাত বলেন, একজন শিক্ষক বা যেকেউ যে কোনো জায়গায় থেকে সনদ অর্জন করতে পারেন। তার সনদটি ভুয়া নয় দাবি করে তিনি কালবেলাকে বলেন, একটি মহল আমার বিরুদ্ধে ঘড়যন্ত্র করছে। তবে তার কাছে ব্যাচ নাম্বার, রোল নাম্বার, রেজিস্টেশন নাম্বার, শিক্ষা বর্ষ জানতে চাইলে বলেন, অনেক দিনের ঘটনা এই মুহূর্তে মনে নেই।
স্ত্রীর জাল সনদে চাকরি বিষয়ে জানতে চাইলে গগনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোয়াজ্জেম হোসেন মুঠোফোনে কালবেলাকে বলেন, পুরোটা ওই রকম নয়। তাহলে কি
নওগাঁ।