নিজস্ব প্রতিবেদক।
রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র মানিক মিয়া এভিনিউ। জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের অবতারণা। কোরআন তেলাওয়াত, গীতা পাঠ, বাইবেল ও ত্রিপিটক পাঠের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করল জাতীয় নাগরিক পার্টি।
জাতীয় সংগীতের গাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে নতুন এ দলের আহ্বানে সাড়া দেন। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দলটির কর্মী-সমর্থকরা ছুটে আসেন, সৃষ্টি হয় এক ব্যতিক্রমী মিলনমেলা।
জাতীয় নাগরিক পার্টি তাদের ঘোষণায় বলেছে, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতা বিবেচনায় তারা নতুন সংবিধান প্রণয়ন ও গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের চাওয়া-পাওয়ার প্রতিফলন ঘটাতে চায়। বিশেষ করে তরুণদের আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন পূরণ করাই তাদের অন্যতম লক্ষ্য।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন দলগুলোর আত্মপ্রকাশ গণতন্ত্রের বিকাশে নতুন দিগন্তের সূচনা করতে পারে। বিশেষ করে তরুণদের আকাঙ্ক্ষা ও রাজনৈতিক বিকাশের সুযোগ সৃষ্টি করা হলে এটি ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
নতুন দলটির আত্মপ্রকাশের ধরন ব্যতিক্রমী ও তাৎপর্যপূর্ণ। ভিন্ন ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ পাঠের মাধ্যমে তারা ধর্মীয় সহাবস্থান ও ঐক্যের বার্তা দিয়েছে। এমন একটি উদ্যোগ জনসাধারণের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে।
জাতীয় নাগরিক পার্টি কেবল আত্মপ্রকাশ করল, কিন্তু সামনের পথটি সহজ নয়। রাজনৈতিক অঙ্গনে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করতে হলে দলটিকে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি ও জনকল্যাণমুখী পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে হবে। তাদের ঘোষিত নতুন সংবিধান ও গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি কিভাবে বাস্তবায়িত হবে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ কি নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলবে, নাকি এটি একটি স্বল্পস্থায়ী তরঙ্গ হয়ে থাকবে— সেটির উত্তর সময়ই দেবে। তবে একটি বিষয় নিশ্চিত, দলটি ইতোমধ্যে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে জায়গা করে নিয়েছে।