সুমাইয়া মোস্তাকিম শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধি:
বগুড়ার শিবগঞ্জে শাহ আলম সুজা হত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৮০ জনের নামে আদালতে মামলা। আসামীদের দ্রুত আটক করতে জেলা বিএনপির সহ- সভাপতি ও শিবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মীর শাহে আলম সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, শিবগঞ্জ উপজেলার ময়দানহাট্রা ইউনিয়নের মহাবালা গ্রামের মৃত ছামুস উদ্দিন আহমেদের পুত্র ভিকটিম শাহ আলম সুজা। সে এলাকায় বিএনপির নেতার্মীদের সাথে সাক্ষাৎ শেষে বাড়ি ফির ছিলেন। এসময় মহাজোটের ক্যাডার বাহীনিরা এলাকায় সাধারণ জনগণের ওপর বিভিন্ন অন্যায় নির্যাতন করতে থাকে। ভিকটিম শাহ আলম সুজা তাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে এগিয়ে আসেন। পরে তারা সেখান থেকে চলে যান। একপর্যায়ে তারা সুজার ক্ষতি সাধনের সুযোগ খোঁজেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৬/০১/২০১৮ ইং সালের শুক্রবার মহাবালা স্কুল মাঠে তৎকালীন মহাজোট এমপি শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ’র কর্মী সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় সুজা বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সুজা মহাবালা ব্রিজের সন্নিকটে পৌঁছলে পূর্বে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা ৫০/৬০ জন এ মামলার প্রধান আসামী সদ্য বিদায়ী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ৯নং আসামী একাত্তর টিভির উপস্থাপিকা ফারজানা রূপার পরিকল্পনা, হুকুম ও নির্দেশনায় বিরোধী দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতা কর্মীদের নিশ্চিন্ন করার লক্ষ্যে তারা দলবদ্ধ হয়ে সুজার মাথায় আঘাত করে। একপর্যায়ে এ মামলার ১২নং আসামী শাহ নেওয়াজ বিপুল ও ১৫ নং আসামী সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এসএম রুপম ভিকটিম সুজার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে অপহরণ করে অজ্ঞাত কালো হাইস মাইক্রোবাস যোগে তুলে নিয়ে যায়। এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে স্বাক্ষীরা মামলায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। পরে প্রত্যক্ষদর্শীরা সুজার পরিবারে জানালে তারা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও সুজার সন্ধান মিলাতে পারে না। এরপর শাহ আলম সুজার সন্ধান কোথাও না পেয়ে তার পরিবারের সদস্যরা শিবগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ মামলা না নিয়ে জিডি এন্ট্রি করেন। পরবর্তী ২/২/১৮ইং শুক্রবার নওগাঁ জেলার রানীনগর থানা এলাকায় শাহ আলম সুজার অর্ধগলিত মরদেহ পাওয়া যায়। এরপর সুজার পরিবারের লোকজন জানতে পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সুজার লাশ হিসেবে শনাক্ত করেন। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরীর পর সুজার পরিবারের লোকজন থানায় মামলা করতে গেলে থানায় মামলা নিতে পুলিশ নারাজ হয়। তারা বার বার থানায় মামলা করতে গেলে উল্টো পুলিশই তাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। একপর্যায়ে তারা মামলা করার সাহস হারিয়ে ফেলেন। এরই ধারাবাহিকতায় স্বৈরাচার হাসিনা পদত্যাগের পর বাদীসহ ভিকটিমের পরিবারের লোকজন স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসে বগুড়া জেলা অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিবগঞ্জ আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেন। এমামলার আসামীরা হলেন,
১/ সদ্য বিদয়ী সাবেক প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা (৭৭) ২/ শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহেনা (৭৪) ৩/হাসিনা পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় (৫২) ৪/ হাসিনা কন্যা সালমা ওয়াজেদ পুতুল (৫৪) ৫/ শেখ রেহেনার পুত্র রেদোয়ান মজিব সিদ্দিকী ববি(৪৫) ৬/ বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ (৬০), ৭/ হাসিনার তথ্য সচিব- নাইমুল ইসলাম খান(৬৫), ৮/ একাত্তর টিভির উপস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু (৬২), ৯/ একাত্তর টিভি উপস্থাপিকা ফাজানা রূপা (৫০), ১০/ ৩৭ বগুড়া-২ শিবগঞ্জের সাবেক এমপি শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ (৫২), ১১/ সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ রিজু(৫৭), ১২/উপজেলা সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শাহ নেওয়াজ বিপুল (৩২), ১৩/ সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রিজ্জাকুল রহমান রাজু (৩৫), ১৪/ এমপি পুত্র হুসাইন শরীফ সঞ্চয় (৩৫), ১৫/ সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এসএম রুপম (৪৮), ১৬/বুড়িগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউর করিম চঞ্চল (৩৮) ১৭/ আওয়ামী লীগের সাবেক উপজেলা সভাপতি আজিজুল হক (৬৮), ১৮/ বিহার ইউপি চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম (৪০) ১৯/ শিবগঞ্জ সদর ইউপি চেয়ারম্যান সহিদুল ইসলাম শহিদ (৫৮) ২০/ আটমুল ইউপি চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন (৫২) ২১/ মোকামতলা ইউপি চেয়ারম্যান আহসান হাবিব সবুজ(৪০) ২২/ যুবলীগ নেতা মতিয়ার রহমান মতিন বিহার (৪৮) ২৩/ শিবগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু রায়হান (২৮), ২৪/ শিবগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আমারুল হক আরমান(৩২) ২৫/ শিবগঞ্জ উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম, ২৬/ যুবলীগ নেতা মমিনুল ইসলাম (৩৮), ২৭/ আওয়ামীলীগ নেতা রবিউল ইসলাম(৫০) ২৮/ জাতীয় পার্টি নেতা সোহাগ (৪৫)২৯/ পৌর কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিন (৬৫) ৩০/ শিবগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক সোহেল রানা মিন্টু, (৩৫) ৩১/ শ্রমিক লীগ নেতা লুৎফর রহমান, ৩২/ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল মিয়া (৪২) ৩৩/ মোশাররফ হোসেন ছাতুয়া মাঝিহট্র ৩৪/ মাসুদ রানা মাঝপাড়া নুরুবাজ, ৩৫/ যুবলীগ নেতা মারুফ হোসেন, মোকামতলা ৩৬/ যুবলী নেতা মোমিনুল ইসলাম লিটন চৌধুরী, ৩৭/ জাতীপার্টি নেতা ইউপি সদস্য ইসরাফিল ইসলাম ৩৮/ জাতীয়পার্টি নেতা ছানাউল হক ছানা, ৩৯/ জাতীয় পার্টি নেতা খোকন, ৪০/ কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা মোবাশ্বের হোসেন স্বরাজ ৪১/ সৈকত ৪২/ জেমি পিতা মৃত আব্দুর রশিদ, ৪৩/ শিবগঞ্জ উপজেলা সাংগঠনিক সম্পাদক ছাইফুল ইসলাম ৪৪/ রায়নগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহজাহান কাজী, ৪৫/ আওয়ামী নেতা ইউয়ূব আলী মন্ডল ৪৬/ আওয়ামী নেতা বাবু ঘাটেল অরফে লঙ্গী বাবু মহাস্থান ৪৭/ জাতীয় পার্টি নেতা পুটু মিয়া ৪৮/ ইউপি সদস্য বেলাল হোসেন মন্ডল গড়মহাস্থান ৪৯/ জাতীয় পার্টি নেতা আল আমিন ৫০/ আওয়ামী নেতা শহিদুল ইসলাম, ৫১/ যুবলীগ নেতা সাজ্জাদ হোসেন টুটুল ৫২/ যুবলীগ নেতা দুলাল ৫৩/ পিরব ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহ জাহান আলী ফকির, ৫৪/ সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, ৫৫/আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল গফুর, ৫৬/ শিবগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বদিউজ্জামাল বদি ৫৭/ সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর ৫৮/ মোকামতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাজা চৌধুরী ৫৯/ আটমুল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান, ৬০/ সৈয়দপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহার উদ্দিন ৬১/ সাধারন সম্পাদক মাসুদ আর রহমান শুকু ৬২/ আওয়ামী লীগ নেতা নবাব আলী ৬৩/আওয়ামী নেতা ধলু মিয়া, ৬৪/ শাকিল আহমেদ রুবেল, ৬৫/ আওয়ামী নেতা ফজলুল বারী রিপন, ৬৬/ আওয়ামী নেতা জরিপ ৬৭/ আওয়ামী লীগ নেতা বুলু মিয়া, ৬৮/ মাইজিদ বঙ্গবাসি ৬৯/ তছলিম উদ্দিন ৭০/ রেজভী ৭১/ বাবু মিয়া, ৭২/শহিদুল ইসলাম ৭৩/ মোশাররফ হোসেন, ৭৪/ খায়রুল ইসলাম ৭৫/ বিহার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোনায়েম হোসেন ৭৬/ গোলাম মোস্তফা ৭৭/সাইফুল ইসলাম ৭৮/ জাতীয় পার্টি নেতা খোকন ইসলাম ৭৯/ আওয়ামী নেতা জাহিদুর রহমান ৮০/ কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগ নেতা সোহাগ মিয়া। এছাড়া এ মামলায় ৫০/৬০ জনকে অজ্ঞাত নামা করে আসামি করা হয়েছে৷ এদিকে এ মামলার আসামীদের আটক করতে বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও শিবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মীর শাহে আলম শিবগঞ্জবিএনপি কার্যালয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন বগুড়া জেলা বিএনপি’র সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম তাজুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এ্যাডঃ আব্দুল ওহাব, পৌর বিএনপি নেতা আব্দুল করিম, যুবদল নেতা খালিদ হাসান আরমান, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রায়হানুল হক রনি প্রমূখ।