সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার: রকিব হাসান রবিন, নকলা, শেরপুর।
শেরপুর জেলার নকলা থানার আওতাধীন চন্দ্রকোনা পুলিশ ফাঁড়ি তদন্ত কেন্দ্র ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভূমিহীন মোজাম্মেল প্রায় ৭/৮ বছর যাবত তার প্রিয়তমা স্ত্রী সুমিকে নিয়ে ৮ নং চরঅষ্টধর ইউনিয়ন এ অবস্থিত স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিত্যক্ত সরকারি কোয়ার্টারে বসবাস করছেন।তার স্ত্রী সুমি ছিল ভয়াবহ পরকীয়া নেশায় আসক্ত।বিয়ের পর থেকেই সে একাধিক পুরুষের সাথে মেলামেশা ও পরকীয়া নেশায় আসক্ত ছিল। জানা যায় সম্প্রতি সে মন্ডল মিয়া নামে স্থানীয় এক রাজমিস্ত্রির সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে তার সাথে গোপনে পালিয়ে যায়। তারপর সুমির স্বামী মোজাম্মেল অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে সুমিকে রাজধানী ঢাকার আটি বাজার এলাকা থেকে নিজের কাছে ফেরত আনেন।
সুমির স্বামী মোজাম্মেল জানান যে,শুক্রবার সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে তিনি খাবার আনতে কোয়ার্টার থেকে বের হয়ে নারায়ণখোলা বাজারে যান।সন্ধ্যার পর কোয়ার্টারে ফিরে ভেতর থেকে কোয়ার্টারের দরজা লাগানো দেখতে পান সুমির স্বামী মোজাম্মেল। তারপর সে বাউন্ডারির প্রাচীর দেওয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করে তার প্রিয়তমা স্ত্রী সুমিকে একটি কক্ষের বাঁশের ধন্যার সাথে গলায় কাপড় পেঁচিয়ে ফাঁসিতে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে সাথে সাথে স্থানীয়দের সহযোগিতা নিয়ে পুলিশে খবর দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।
শেরপুরের নকলা থানাধীন আওতাভুক্ত চন্দ্রকোনা পুলিশ ফাঁড়ি তদন্তকেন্দ্রের বিচক্ষণ উপপরিদর্শক (নিরস্র) মো:আব্দুর রহিম জানান যে, আমরা খবর পাওয়ার পরক্ষণেই ৮নং চরঅষ্টধর ইউনিয়ন এর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের সরকারি পরিত্যক্ত কোয়ার্টারে অবস্থান গ্রহণ করে একটি কক্ষ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় সুমি নামের একজন মহিলার মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করার কাজ সম্পন্ন করে ঝুলন্ত লাশটির ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ সকল ব্যবস্থা দ্রুত গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে নকলা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ডা. মোহাম্মদ উল্লাহ রাব্বী জানান,৮ নং চরঅষ্টধর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে মা ও শিশু সেবা প্রদান করার জন্য প্রতিদিন একজন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা বসেন। কিন্তু এই সরকারি কোয়ার্টারটি প্রায় দীর্ঘ ১৫ বছর যাবত পরিত্যক্ত ঘোষণা করায় সেখানে তিনি থাকেন না।নেই কোন নিরাপত্তা প্রহরী। স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল মোজাম্মেলের পরিবারকে সেই পরিত্যক্ত কোয়ার্টারে থাকতে দিয়েছেন। আমরা বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এবং আমাদের পক্ষ থেকে মোজাম্মেল এর পরিবারকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারপরও যদি এখানে আপনি বসবাস করেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে নিজ জিম্মায় থাকতে হবে। অপ্রীতিকর কোন কিছু ঘটলে আমরা এর কোন প্রকার দায়ভার বহন করবো না।।