রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:১৫ অপরাহ্ন

লোহাগড়ায় মিথ্যা ও হয়রানীমূলক মামলা দায়েরের ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে কামঠানার মানুষেরা

শরিফুজ্জামান, নড়াইল প্রতিনিধি :
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৬০ বার পড়া হয়েছে

শরিফুজ্জামান, নড়াইল প্রতিনিধি :

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কামঠানা গ্রামে একটি মিথ্যা মামলা দায়েরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে সাধারণ সচেতন মানুষজন। এসব মানুষের অভিযোগ, লোহাগড়া ইউনিয়নের মোচড়া গ্রামের জলিল শেখের ছেলে বহু মামলার আসামি নয়ন শেখ নিজের অপকর্ম ঢাকার জন্য এহেন মিথ্যা ও হয়রানীমূলক মামলা দায়ের করেছে। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে ন্যায় বিচারের দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারসহ গ্রামবাসী।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকালে সরেজমিনে কামঠানা গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষজনদের সাথে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।

সরেজমিনকালে আরও খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে সম্প্রতি মুচড়া গ্রামের জলিল শেখের ছেলে নয়ন শেখ তার আপন ভাগ্নে একই গ্রামের ফরিদ শেখের ছেলে আব্দুল্লাহ শেখের স্ত্রীর কাছে অনৈতিক কাজের প্রস্তাব করে। এ ঘটনায় ভাগ্নে আব্দুল্লাহ ক্ষুব্ধ হয়ে মামা নয়ন শেখকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এ ঘটনায় নয়ন নিজের অপকর্ম ঢাকার জন্য ভাগ্নে আব্দুল্লাহ শেখের নাম বাদ দিয়ে পাশের কামঠানা গ্রামের হাফিজার মুন্সির ছেলে আশিকুর রহমান সানজার (৩৫) ও শরিফুল মুন্সি (৪০) , রবিউল মুন্সির ছেলে সাজিদ মুন্সি (২১), মোচড়া গ্রামের বাগু শেখের ছেলে জামাল শেখ (৫০) ও নড়াইল সদর উপজেলার বাশগ্রামের গফফার মাহামুদের ছেলে শিবলী নোমান মাহামুদ (৪০) কে আসামি করে নড়াইলের আমলি আদালতে একটি মিথ্যা ও হয়রানি মূলক মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ২৬৭/২৫। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে লোহাগড়া থানা পুলিশ গত ০১/১২/২০২৫ ইং; তারিখে উক্ত মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়। মামলা দায়েরের পর পহেলা ডিসেম্বর লোহাগড়া থানার এস আই ইমরান আহমেদ অভিযান চালিয়ে লোহাগড়া বাজার থেকে রবিউল ইসলাম এর ছেলে আশিকুর রহমান সানজার (৩৫) কে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হচ্ছে, এ মামলার সাক্ষী মুচড়া গ্রামের হিরু শেখের ছেলে আল আমিন
শেখ (৩১)। তিনি নয়নের উপর হামলা সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে অভিযোগ করে বলেন। কেন আমাকে সাক্ষী করা হলো এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।

এই মামলার আসামি সাজিদের পিতা কামঠানা গ্রামের ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম বলেন, শুধুমাত্র নিরাপত্তার অভাবে আমি আমার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে লোহাগড়া শহরের পোদ্দারপাড়ায় বসবাস করছি। প্রায় ১০ মাস পূর্বে মুচড়া গ্রামের বহু অপকর্মের হোতা নয়ন ও তার চাচাত ভাই সাওন পরস্পর যোগসাজসে মিতালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাশে আমাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে দুই লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় আমি বাদি হয়ে লোহাগড়া থানায় চারজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করি। যার মামলা নং- ০৮, তারিখ: ১২/০২/২০২৫। এ মামলা দায়েরের ঘটনায় নয়ন নিজের অপকর্ম ঢাকার জন্য আমার ছেলে ও ভাইকে আসামি করে লোহাগড়া থানায় অপর একটি মামলা দায়ের করেছে। আমি এহন মিথ্যা ও হয়রানি মূলক মামলার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং তদন্ত করে সৃষ্ট ঘটনার প্রকৃত জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

এসব বিষয়ে লোহাগড়া ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড এর ইউপি সদস্য রতন শেখের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ঘটনাটি ঘটেছে মুচড়া গ্রামে অথচ আসামি করা হয়েছে আমার গ্রামের নিরীহ চারজন ব্যক্তির নামে। আমি এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে লোহাগড়া থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত অজিত কুমার রায় বলেন, এ মামলার ঘটনা তদন্ত করে প্রকৃত জড়িতদের অভিযুক্ত করে পুলিশ আদালতে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে বলে আশ্বস্ত করেন।

শরিফুজ্জামান নড়াইল

সংবাদ টি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ